উপদেশ pdf ডাউনলোড

উপদেশ pdf download, আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ বই download, upodesh pdf download, উপদেশ বই pdf download
উপদেশ pdf download, আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ বই download, upodesh pdf download


একটু পড়ুন: 
উপদেশ গ্রহণের গুরুত্ব:
তামীম আদ-দারী (রাঃ) হতে বর্ণিত নবী করীম (ছাঃ) বলেন, “দ্বীন হচ্ছে উপদেশ'। অর্থাৎ যথাযথভাবে কল্যাণ কামনা করা। কথাটি নবী করীম (ছাঃ) তিনবার বললেন। আমরা বললাম, কার জন্য? তিনি বললেন, 'আল্লাহ্র জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রাসূলের জন্য, মুসলিম নেতাদের জন্য এবং সাধারণ মুসলমানের জন্য' (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৬৬)।

জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে বায়'আত বা শপথ করেছি ছালাত প্রতিষ্ঠা করার, যাকাত প্রদান করার এবং সকল মুসলমানের কল্যাণ কামনা করার' (বুখারী হা/৫৭, ৫২৪; মুসলিম হা/৫৬)।


আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, 'নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা তোমাদের তিনটি কাজে সন্তুষ্ট হন এবং তিনটি কাজে অসন্তুষ্ট হন। 

(১) যখন তোমরা আল্লাহ্র ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে বিন্দুমাত্র শরীক করো না। (২) আল্লাহ্র বিধানকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধর আর বিচ্ছিন্ন হও না এবং (৩) আল্লাহ যাকে তোমাদের কাজের নেতা হিসাবে নির্বাচন করেন, তার জন্য তোমরা পরস্পরে কল্যাণ কামনা কর। এ তিনটি কাজে আল্লাহ তোমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হন। আর তোমাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হন-  (১) অপ্রয়োজনীয় কথা বললে  (২) সম্পদ নষ্ট করলে এবং  (৩) অনর্থক বেশী প্রশ্ন করলে (আহমাদ হা/৮৭৮৫; ইবনু হিব্বান হা/৩৩৮৮)

অত্র হাদীছগুলিতে (উপদেশ) একটি শব্দ রয়েছে, যার ভাবার্থ এক কথায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে অল্প কথায় এভাবে বলা যায় যে, প্রত্যেকের যথাযথ হক বা অধিকার খালেছভাবে আদায় করাই হচ্ছে 'নছীহত'। আল্লাহ্র জন্য উপদেশ হচ্ছে, তাঁর সাথে কোন প্রকার শরীক না করা। তাঁর কিতাবের জন্য উপদেশ হচ্ছে, তা যথাযথভাবে তেলাওয়াত করা, জানা-বুঝা ও মান্য করা। রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য উপদেশ হচ্ছে, যথাযথভাবে কথা ও কর্মে তাঁর আনুগত্য করা। 


মুসলিম নেতাদের জন্য উপদেশ হচ্ছে, তাঁর যথাযথ আনুগত্য করা। ভুল- ত্রুটি দেখলে ধৈর্য ধারণ করা এবং সার্বক্ষণিক তাঁর কল্যাণ কামনা করা। আর সাধারণ মুসলমানের জন্য উপদেশ হচ্ছে, পরস্পরের কল্যাণ কামনা করা। আর নেতার জন্য উপদেশ হচ্ছে তার কাজে সহায়তা করা। তার বিরোধিতা না করা। এবং তার ত্রুটি দেখলে ধৈর্য ধারণ করা।

মানার উদ্দেশ্যে উপদেশ শুনতে হবে :

মুসলমানের জন্য যরূরী হচ্ছে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ জানা এবং তদনুযায়ী আমল করা। জেনে না মানা বা না মানার উদ্দেশ্যে জানা মুনাফিকের আমল। কাজেই মেনে চলার উদ্দেশ্যে জানা একাত্ম কর্তব্য। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা মুমিনদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বলেন, (আরবি) 'মুমিন তারাই যারা বলে, আমরা শ্রবণ করেছি (জেনেছি) ও মান্য করেছি' (বাক্বারাহ ২৮৫)। এ ব্যাপারে হাদীছে এসেছে,

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আব্দুল কায়েম গোত্রের প্রতিনিধিদল যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দরবারে এসে পৌঁছল, তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কোন গোত্র অথবা কোন্ প্রতিনিধিদল (রাবী সন্দেহ ) ? তারা বলল, রবী'আহ গোত্র। তিনি বললেন, তোমাদের গোত্রকে অথবা তোমাদের প্রতিনিধিদলকে মুবারকবাদ যা অপমানহীন ও অনুতাপবিহীন। তারা বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল! 'হরম'-এর (যুদ্ধ নিষিদ্ধ) মাসগুলি ব্যতীত আমরা আপনার নিকটে আসতে পারিনা। কেননা আমাদের ও আপনার মাঝে কাফের 'মুযার' গোত্রটি অন্তরায় হয়ে আছে। অতএব আপনি আমাদেরকে এমন পরিষ্কার চূড়ান্ত কিছু বিষয় নির্দেশ করুন, যা আমরা আমাদের বাকী লোকদের গিয়ে বলতে পারি ও যার দ্বারা আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। 


রাবী বলেন, তারা তাঁকে পানপাত্র সমূহের ব্যাপারেও জিজ্ঞেস করল। জবাবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে চারটি বিষয়ে নির্দেশ দিলেন ও চারটি বিষয়ে নিষেধ করলেন। তিনি তাদেরকে নির্দেশ দিলেন কেবলমাত্র এক আল্লাহ্র উপরে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য। অতঃপর বললেন, তোমরা কি জানো কেবলমাত্র আল্লাহ্র উপরে বিশ্বাস স্থাপনের অর্থ কী? তারা বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক জ্ঞাত। অতঃপর ছালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা ও রামাযানের ছিয়াম পালন করা। এতদ্ব্যতীত জিহাদলব্ধ গণীমতের মাল থেকে এক পঞ্চমাংশ তোমরা নেতার নিকটে জমা দিবে।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে চারটি পাত্র সম্পর্কে নিষেধ করলেন, যা হ'ল : (১) 'হান্তাম' অর্থাৎ শরাব তৈরীর কলসী যার গর্দান সবুজ ও লাল রংয়ের (২) 'দুব্বা' অর্থাৎ লাউ বা চাল কুমড়ার শুকনা খোল দ্বারা প্রস্তুত মদ্যভাণ্ড (৩) 'লাকীব' অর্থাৎ গাছের গুড়িতে গর্ত করে সেখানে শরাব বানানোর পাত্র বিশেষ (৪) ‘মোযাফফাত' অর্থাৎ আলকাতরা' বা অনুরূপ গাঢ় তৈলজাতীয় বস্তু দ্বারা মোড়ানো মদ্যপাত্র বিশেষ। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে বললেন, তোমরা এগুলি বিষয় স্মরণ রাখবে ও তোমাদের বাকী লোকদের জানিয়ে দিবে' (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৭: বাংলা মিশকাত হা/১৬)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ছাহাবীগণ শরী'আত শোনার জন্য রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট আসতেন এবং সে অনুপাতে আমল করে জান্নাত পাওয়ার আকাংখা পোষণ করতেন


ওবাদাহ বিন ছামেত (রাঃ) বলেন, একদা একদল ছাহাবী দ্বারা আবেষ্টিত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে বললেন, তোমরা আমার নিকটে বায়'আত কর এ বিষয়ে যে, (১) তোমরা আল্লাহ্র সাথে অন্য কিছুকে শরীক করবে না (২) চুরি করবে না। (৩) যেনা করবে না (8) তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না (৫) কারু প্রতি অপবাদ দিবে না (৬) মা'রূফ তথা শরী'আত সংগত বিষয়ে অবাধ্যতা করবে না। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এসব অঙ্গীকার পূর্ণ করবে, তার পুরস্কার আল্লাহ্র নিকটে রয়েছে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি এসবের কোন একটি করবে, তার জন্য যদি দুনিয়াতে (আইন সঙ্গতভাবে) শাস্তি হয়, তবে সেটা তার জন্য কাফ্ফারা হবে (এজন্য আখেরাতে পুনরায় শান্তি হবে না)। আর যে ব্যক্তি উক্ত পাপসমূহের কোন একটি করেছে, অথচ আল্লাহ তা ঢেকে দিয়েছেন (বা দুনিয়ায় কোন শাস্তি হয়নি), তাহ'লে সে বিষয়টি আল্লাহর উপরে নির্ভর করে। তিনি ইচ্ছা করলে উক্ত অপরাধ মাফ করতে পারেন, শান্তি ও দিতে পারেন। রাবী বলেন, আমরা এসকল কথার উপরে তাঁর নিকটে রায়'আত করলাম' (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৮)। 


অত্র হাদীছে বুঝা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যে কথাগুলি বলতেন সে কথাগুলি মেনে চলার জন্য ছাহাবীদের নিকট থেকে ওয়াদা বা অঙ্গীকার নিতেন। কোন কোন ছাহাবী রাসূল (ছাঃ)-এর মুখ থেকে কিছু শুনে বলতেন আল্লাহর কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যা শুনলাম তার কম-বেশী করব না' (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৪) ।

ছাহাবীগণ জান্নাতে প্রবেশের এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের আমল শুনতে

চাইতেন (তিরমিযী, মিশকাত হা/২৯, হাদীছ ছহীহ)।
আলোচ্য হাদীছ সমূহ দ্বারা সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিত হয় যে, জাহান্নাম থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে এবং জান্নাত লাভের আশায় আলেমদের নিকট কুরআন-হাদীছ শুনতে হবে এবং সে অনুযায়ী আমল করতে হবে। এখানে যেহেতু আমল করার উদ্দেশ্যে শুনতে হবে, কাজেই সত্য-মিথ্যা যাচাই করে শুনা একান্ত যরূরী। কারণ বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে বানাওয়াট ও জাল হাদীছ রয়েছে এবং মিথ্যা তাফসীর রয়েছে। আর সে কারণে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাঃ) মুসলমানকে যথাযথভাবে সতর্ক করেছেন। আল্লাহ তা'আলা বলেন, (আরবি) হে মুমিনগণ! যদি কোন ফাসিক ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ নিয়ে আসে তবে তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখ, যেন অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতি না কর এবং নিজেদের কর্মের জন্য অনুতপ্ত হও' (হুজুরাত ৬)। 


এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কোন ব্যক্তি যে কোন ব্যাপারে কোন কথা বললে তা তদন্ত করে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথা এর ফলাফল হবে অপমানজনক। মুফাসসির জাসসাস (রহঃ) স্বীয় ‘আহকামুল কুরআনে বলেন, এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় যে, কোন ফাসিক ও পাপাচারীর খবর কবুল করা এবং তদনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা জায়েয নয়, যে পর্যন্ত না অন্যান্য উপায়ে তদন্ত করে এর সত্যতা প্রমাণিত হয়। দুর্ভাগ্য যে, আমাদের দেশে অধিকাংশ বক্তাই যাচাই-বাছাই করে বক্তব্য পেশ করেন না। 

কাজেই আমাদের জন্য যরূরী হচ্ছে, তাদের বক্তব্যকে যাচাই-বাছাই করে আমল করা। অন্যথা আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবো। অত্র আয়াতটি ইমাম নববী ছহীহ মুসলিমের ভূমিকায় উদ্ধৃত করে সকলকে এ বলে সতর্ক করেছেন যে, হাদীছ বর্ণনাকারীর সততা যাচাই করতে হবে এবং ফাসিক মুহাদ্দিছের কথা শ্রবণ থেকে বিরত থাকতে হবে। যারা সত্য-মিথ্যা যাচাই-বাছাই করে বক্তব্য পেশ করেন না তাদের থেকে বেঁচে থাকতে হবে। 


আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, 'শেষ যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। তারা তোমাদের নিকট এমন সব অলীক কথা-বার্তা উপস্থিত করবে, যা না তোমরা শুনেছ না তোমাদের বাপ-দাদা শুনেছে। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে বেঁচে থাকো এবং তাদেরকে তোমাদের থেকে বাঁচাও। অর্থাৎ সম্পূর্ণরূপে বিরত থাক। যাতে তোমাদের পথভ্রষ্ট করতে না পারে এবং তোমাদের বিপথগামী করতে না পারে' (মুসলিম, মিশকাত হা/১৫৪)

উপদেশ বই pdf download করতে নিচে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন।

Post a Comment

স্প্যাম কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন! ধন্যবাদ, পিডিএফ বই ডাউনলোড সমস্যা হচ্ছে? এখানে দেখুন>যেভাবে PDF ডাউনলোড করবেন?

Previous Next

نموذج الاتصال