মুসলিম জাতির প্রতি মহা উপদেশ pdf download, শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া (র.) বই muslim jatir proti moha upodesh pdf download |
একটু পড়ুন:
বাড়াবাড়ি ধ্বংসের মূল
কতিপয় পণ্ডিত, পীর, আলিম ও শায়খের বিষয়ে অতিভক্তি, সীমালঙ্ঘন ও অতি বাড়াবাড়ি করা, চাই তা শায়খ আদী অথবা ইউনুস কাঞ্জরী, মানছুর হাল্লাজ অথবা অনুরূপ যে কোন ব্যক্তির বিষয়ে হোক তা হবে সীমাহীন গোমরাহী। মহান খলিফা ও বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আলী (রাঃ) ও শীর্ষস্থানীয় নবী ঈসা (আঃ) এর বিষয়ে বাড়াবাড়িও তারই অন্তর্ভুক্ত। যে ব্যক্তি কোন বিশিষ্ট নবী অথবা পুণ্যবান ব্যক্তির ব্যাপারে যেমন আলী (রাঃ) অথবা আদী অথবা অনুরূপ যে কোন ব্যক্তির বিষয়ে সীমা অতিক্রম করবে অথবা তার বিষয়ে এ বিশ্বাস করবে যে, তার মধ্যে কল্যাণ নিহিত আছে; যেমন হাল্লাজ, অথবা মিশরের বিচারক, অথবা ইউনুস কাণ্ডারী অথবা অন্য যে কোন মানুষের বিষয়ে, অথবা তার মধ্যে ইলাহ এর কোন ক্ষমতা আছে বলে মনে করা যথাঃ এ কথা বলা যে, উমুক পীর বা শায়খের ইচ্ছে মোতাবেক প্রত্যেক ব্যক্তিকে খাদ্য দেওয়া হয়; বকরী যবাইয়ের সময় বলা- আমার নেতার নামে, আমার বাবা ও পীরের নামে; সিজদা করে তার ইবাদত করা, তার কবরে সিজদা করা অথবা আল্লাহ ছাড়া অন্যের কাছে দু'আ করা, যেমন এভাবে বলা- হে আমার উমুক বাবা, পীর, সরদার, গাউস, কতুব আমাকে ক্ষমা কর।
আমার প্রতি রহম কর, আমাকে সাহায্য কর, আমাকে রিযিক দাও, আমাকে পরিত্রাণ দাও, আমাকে মুক্তি দাও অথবা একথা বলা যে, তোমার উপরই আমি নির্ভরশীল, আপনিই আমার জন্যে যথেষ্ট অথবা আপনার যথেষ্টতায় আমি আশাবাদী ইত্যাদি কথা বলবে, সে ইসলাম থেকে সম্পূর্ণরূপে পরিচ্ছন্ন ভাবে বের হয়ে যাবে। কেননা উপরোক্ত কথা ও কার্যাবলী 'রব' এর বৈশিষ্টের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত, যা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য প্রযোজ্য নয়। সুতরাং এ ধরণের কাজ সম্পূর্ণ শিরক ও পথভ্রষ্ট। এর জন্যে ঐ ব্যক্তির উপর তওবা জারী করতে হবে। যদি তওবার নির্দেশ পাওয়ার পরও তওবা করে ইসলামে ফিরে না আসে তাহলে ইসলামী প্রশাসনের রায় অনুযায়ী তাকে হত্যা করতে হবে । বস্তুতঃ আল্লাহ্ রসুলগণকে প্রেরণ করেছেন এবং অসংখ্য কিতাব অবতীর্ণ করেছেন যাতে এক আল্লাহর ইবাদত করা হয়, তার সঙ্গে যেন শরীক করা না হয়, তার সঙ্গে অন্য কিছুকে ইলাহ হিসাবে গ্রহণ না করা হয়।
যারা আল্লাহর সঙ্গে সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র, উষাইর, ঈসা (আঃ) ফেরেশতামন্ডলী, লাত, উজ্জা, মানাত, ইয়াগুস, ইয়াউক, নাছর প্রভৃতিকে ইলাহ হিসাবে ডাকে অথচ তারা ঐ গুলোকে সৃষ্টি জগতের সৃষ্টি কারী, বৃষ্টি বর্ষণ কারী অথবা উদ্ভিদ ও সুজলা শষ্য শ্যামল উৎপাদনকারী স্রষ্টা বলে বিশ্বাস করে না। বস্তুতঃ তারা ফেরেস্তাগুলী, নবীগণ, জ্বীন, নক্ষত্ররাজী, নির্মিত মূর্তিসমূহ এবং কবরবাসীর ইবাদত এ জন্যে করে যে, তারা ওদেরকে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌছিয়ে দিতে সক্ষম হবে। তারা ওদের জন্যে আল্লাহর নিকট সুপারিশকারী হবে। আল্লাহ্ নবীদের প্রেরণ করে এ ধরণের ভ্রান্ত আক্বীদার মূলোৎপাটন করেছেন। এধরনের ইবাদত করা হতে সুস্পষ্ট নিষেধ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন,
বল, 'তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে ইলাহ মনে কর তাদেরকে ডাক, (তাদেরকে আহ্বান করলেও দেখবে) তারা তোমাদের দুঃখ-বেদনা দূর করতে বা পরির্তন করতে সক্ষম নয়। তারা যাদেরকে আহবান করে তারা নিজেরাই তো তাদের 'রব' এর নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে যে, তাদের মধ্যে কে কত নিকটবর্তী হতে পারে, তার দয়া প্রত্যাশা করে ও তার শাস্তিকে ভয় করে। তোমার 'রব' এর শাস্তি ভয়াবহ (বনী ইসরাইল ১৭- ৫৬-৫৭)
পূর্বসুরী একটি দল বলেন, প্রাচীনকালে কিছু লোক ছিল যারা মাসীহ, উযাইর ও ফেরেশতামন্ডলীকে ডাকত, তাদের প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, তোমরা যেমন আমার নিকট নৈকট্য চাও তোমরা যাদেরকে ডাকছ তারাও তেমনি আমার নৈকট্য চায়, তোমরা যেমন আমার রহমত চাও তারাও আমার নিকট রহমত চায়। তোমরা যেমন আমার আযাবকে ভয় কর তারাও আমার আযাবকে ভয় করে।
আল্লাহ এদের প্রসঙ্গে বলেন,
বল, তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ইলাহ মনে করতে তাদেরকে আহবান কর। তারা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে অনুপরিমাণও কোন কিছুর মালিক নয় এবং এ দু'য়ে তাদের কোনও অংশ নেই, আর তাদের কেউ আল্লাহ্র সাহায্যকারীও নয়। যাকে অনুমতি দেয়া হয় সে ছাড়া আল্লাহর নিকট কারো সুপারিশ ফলপ্রসু হবে না (সাবা ৩৪ঃ ২২-২৩)।
মহা মহিম পবিত্র আল্লাহ্ অবহিত করছেন যে, আল্লাহ ছাড়া এমন শক্তিকে ডাকা হচ্ছে যাদের রাজত্বের অনুপরিমাণ ক্ষমতা ও অংশীদারী নেই। সৃষ্টি বিষয়ে তাদের কোন ক্ষমতা নেই যার দ্বারা সাহায্য করবে। আর আল্লাহর চয়নকৃত ও মনপূত ব্যক্তি ছাড়া কারো সুপারিশ উপকারে আসবে না।
আল্লাহ আরো বলেন,
আকাশ সমূহে কত ফেরেশতা রয়েছে। তাদের কোন সুপারিশ ফল প্রসু হবে না যতক্ষণ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা এবং যার প্রতি সন্তুষ্ট তাকে অনুমতি না দেন (নাজম ৫৩ঃ২৬)
মুসলিম জাতির প্রতি মহা উপদেশ pdf download করতে নিচে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন।