কবরের বর্ণনা pdf download, মুহাম্মদ ইকবাল কীলানী বই pdf download, Koborer Bornona pdf download |
হে আমার ভায়েরা এ পরিণতি (কবরে যাওয়ার
জন্য প্রস্তুতি নেও
হে সবুজ, শামল, স্বতেজ, পৃথিবীতে জীবন যাপন কারীরা।
হে পৃথিবীর স্বাদে ও আনন্দে উন্মাদ ব্যক্তিবর্গ!
হে রংঙিন ও মনপুত পৃথিবীর মরিচিকার প্রতি আকর্ষিত ব্যক্তি বর্গ।
হে সুন্দর পৃথিবীর সুন্দর্যে মিশে যাওয়া ব্যক্তি বর্গ।
হে চিরস্থায়ী ঠিকানা কে ভুলে গিয়ে অস্থায়ী ঠিকানার অন্বেশন কারীরা।
* ঐ দুঃখ্য ভরাক্রান্ত পথ অন্দকার রাতের ন্যায় হবে।
সেখানে না থাকবে সূর্যের কিরণ না চাঁদের আলো, না থাকবে কোন তারকা রাজীর আলো, না কোন ইলিকট্রিক বাল্পের আলো, না কোন সাধারণ চেরাগের আলো, না চোখে পরবে কোন জোনাকী পোকার ঝাক।
* ঐ দুঃখ্য ভরাক্রান্ত পথে একক কোন মরুচারীর ন্যায় হবে।
সেখানে না থাকবে পিতা-মাতা, না স্ত্রী-ন্তান, না কোন সহানুভুতিশীল, না কোন সান্তনা দাতা, না কোন পীর-মোরশেদ, না থাকবে অবস্থা সম্পর্কে কোন জিজ্ঞস কারী, না কোন সমস্যা দূর কারী, না থাকবে কোন সংরক্ষন কারী, না কোন দেহ রক্ষী, সে খানে না থাকবে কোন দল, না কোন দল নেতা, না থাকবে কোন সভাপতী না কোন মন্ত্রীত্বের বড়াই। না থাকবে সিনেট ও এসেম্বলীর কোন ঠাট বাট, না আদালতের কোন কঠোরতার হুমকী, না থাকবে পুলিশী শাসন, না কোন প্রতিরক্ষা বাহিনীর রেংকের জাঁক জমক, না থাকবে সরকারী উচ্চপদস্ত কোন কর্মকর্তা, না থাকবে জমিদারিত্বের কোন অহংকার, না থাকবে কোন অপহরণ কারী চক্র, না থাকবে কোন ভারাটিয়া হত্যাকারী দল, না থাকবে সুপারীশ করার মত কোন চাচা মামু, না থাকবে ঘোষ হিসেবে পেশ করার জন্য অঢেল সম্পদ ।
* ঐ দুঃখ্য ভরাক্রান্ত পথ কোন বিষাক্ত প্রাণীর আতনকের নায় আতক ময় হবে।
মাটির ঘর, মাটির বিছানা, আলো-বাতাশ শুন্য, পোকামাকর, বিষাক্ত সাপ- বিচ্ছু, সর্বোপরী অন্ধ মূক ফেরেশতা এসে দাড়াবে মাথার উপর ....... ! না থাকবে ভাগার সুযোগ না হবে সান্তি।
হে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমানদারগণ!
সু সংবাদ দাতা ও সতর্ক কারী রূপে প্রেরিত রাসূল মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাই হি ওয়া সাল্লামের) বাণীসমূহ মনোযোগ সহকারে শোন!
অর্থঃ“আমি কবরের চেয়ে অধিক ভিতিকর স্থান আর কোথাও দেখি নাই । (তিরমিযী)
হে হুশিয়ার ব্যক্তি বর্গ। হে বুদ্ধিমান ব্যক্তিবর্গ।
হে একক, অন্ধকার, ভয়ানক, দুঃখ্য ভরাক্রান্ত পথের যাত্রিরা শোন! খালী হাতে, সাথী বিহীন দুঃখ্য ভরাক্রান্ত যাত্রা পথে, ঈমান, ও নেক আমল নামায ,যাকাত, রোজা, হজ্ব-ওমরা, কোরআন তেলাওয়াত, দূ’য়া-দরূদ, দান-খয়রাত, নফল ইবাদত, পিতা-মাতার প্রতি সদ ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা, এতীম-বিধবাদের প্রতি সদ আচরণ, ন্যায় পরায়নতা, সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজে নিষেধ। ইত্যাদি পাথেয় হবে।
যা আতন্ক দূর করবে, আলোদিবে, একাকীত্ব দূর করবে, যান ও জীবনের জন্য আরামের পাথেয় যোগাবে। অতএব হে দুঃখ ভরাক্রান্ত পথের পথিক.....! রওয়ানা হওয়ার পূর্বে মানুষের প্রতি সবচেয়ে বেশী অনুগ্রহ পরায়ন, সবচেয়ে বেশী মায়াবী, সবচেয়ে বেশী কল্যাণ কামী এবং সবচেয়ে বেশী সহানুভূতিশীল দয়াল নবীর উপদেশ একটু মনোযোগ সহ শোন....! একদা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ দুঃখ্যভরাক্রান্ত পথের (কবরের) পার্শ্বে বসে অশ্রুসজল হয়েগেলেন এমন কি তাঁর চোখের পানিতে কবরের মাটি ভিজে গেল, আর তিনি তাঁর সাহাবাগণ কে সম্ভোধন করে বললেনঃ
অর্থঃ “হে আমার ভায়েরা এমন পরিণতী বরণে প্রস্তুতি নেও”। (ইবনে মাযাহ) অতএব আমাদের মাঝে কে আছে যে রহমতের নাবীর কথাগুলি মানবে, এবং ঐ দুঃখ্য ভরাক্রান্ত পথে সফরের প্রস্তুতি নিবে।
পরম করুনাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি
সমস্ত প্রশংসা রাব্বুল আলামীনের জন্য এবং দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর বিশস্ত রাসূলের প্রতি আর শেষ পরিণতি মোস্তাকীনদের জন্য।
এ মনপুত আরামদায়ক জীবনের শেষে আগত সবচেয়ে কঠিন, বেদনাদায়ক, স্ত র হল মৃত্যু। মৃত্যু ঐ তিক্ত স্বাদ যা প্রত্যেক প্রাণীকে গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ তা'লা এরশাদ করেনঃ
অর্থঃ" জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। (আল-আম্বিয়া-৩৫)
অর্থঃ “আল্লাহর চেহারা (সত্ত্বা) ব্যতীত সব কিছু ধ্বংসশীল। (সূরা কাসাস- ৮৮)
মৃত্যুর পর কোন মানুষ ফিরে আসে না, তাই মৃত্যুর ভয়াবহতা হুবহু বর্ণনা করা সম্ভব নয়। কিন্তু কোরআন ও হাদীসে মৃত্যুর কঠিনতা ও ভয়াবহতার ব্যপারে, যা বর্ণিত হয়েছে তা থেকে অনুমান হয় যে পৃথিবীর সর্বপ্রকার দুঃখ্য ব্যথা, চিন্ত 1. কষ্ট, বিপদ যদি একত্রিত হয়, তাহলে মৃত্যুর কষ্ট কয়েক গুণ বেশী হবে।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাই হি ওয়া সাল্লাম ) এরশাদ করেনঃ মৃত্যু যন্ত্রনা অত্যন্ত কঠিন। (আহমদ) অন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছেঃ স্বাদ বিনষ্টকারী কে (মৃত্যু) বেশি বেশি স্মরণ কর। (তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনে মাযাহ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাই হি ওয়াসাল্লাম) যে অসুস্থতায় পতিত হয়ে মৃত্যু বরন করেন সেখানে তাঁর অবস্থা এ ছিল যে পানির পাত্র সাথে রাখতেন এবং সেখানে বারংবার হাত ভিজিয়ে চেহারায় মুছতেন স্বীয় চাদর দিয়ে কখোন মুখ ঢাকতেন, আবার কখোন তা মুখ থেকে সড়িয়ে নিতেন, যখন মৃত্যু যন্ত্রনায় বেহুশ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হতেন তখন তিনি তার চেহারা থেকে ঘাম মুছতেন আর বলতেন : অর্থঃ “মৃতু যন্ত্রনা বড় কঠিন।” (বোখারী) আয়শা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বলেনঃ “নবী ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) মৃত্যু যন্ত্রনা দেখার পর কারো মৃত্যু যন্ত্রনা আমার নিকট আর কঠিন বলে মনে হতনা।” (বোখারী) জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) যবানে অস্পষ্টতা এসে গিয়েছিল। (ইবনে মাযাহ) (মিশর বিজয়ী সাহাবী) আমর ইবনুল আস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বার বার বলতেন ঐ সমস্ত লোকদের কে দেখে আমার আশ্চার্য লাগে মৃত্যুর সময় যাদের হুশ জ্ঞান ঠিক থাকে অথচ তারা কেন যেন মৃত্যুর হাকীকত বর্ণনা করেনা ।
আমর বিন আস (রাযিয়াল্লাহু আনহু) যখন মৃত্যু সয্যায় সাধিত ছিলেন তখন তাকে আবদুল্লা বিন আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) তার ঐ কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন। আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহু শীতল নিঃশ্বাস ত্যাগ করে বলতে লাগলেনঃ মৃত্যুর প্রকৃত অবস্থা বর্ণনা করার মত নয়। তবে এতটুকু বলতে পারি যে আমার মনে হচ্ছে যেন পৃথিবীর উপর আকাশ ভেঙ্গে পরেছে আর আমি এ উভয়ের মাধ্যমে পেশিত হচ্ছি এবং আমার কাঁধে মনে হয় কোন পাহাড় রাখা হয়েছে, পেটে খেজুরের কাটা ভরে দেয়া হয়েছে, আর মনে হচ্ছে যে আমার শ্বাস সূয়ের ছিদ্র দিয়ে বের হচ্ছে।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মোমেন ও কাফেরের মৃত্যুর আলাদা ধরনের কথা বর্ণনা করেছেন। যার সার সংক্ষেপ এই যে যখন মোমেনের মৃত্যুর সময় হয়, তখন সূর্যের ন্যায় আলোক ময় চেহারা সম্পন্ন ফেরেশতা জান্নাত থেকে সুগন্ধময় রেশমী কাফন সাথে নিয়ে এসে মোমেন ব্যক্তিকে সালাম করে, মালাকুল মাওত তার রুহ কবজ করার পূর্বে তাকে সুসংবাদ দেয় যে হে পবিত্র আত্মা! তুমি খুশী হও তোমার জন্য রয়েছে আল্লাহর রহমত এবং জান্নারে নে'মত সমূহ। এ সু সংবাদ সোনে মোমেন ব্যক্তির অন্তর আল্লাহর নিকট যাওয়ার জন্য উদগ্রিব হয়ে যায়।
কবরের বর্ণনা pdf download করতে নিচে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন।