আল কুরআনের শিক্ষা pdf ডাউনলোড

আল কুরআনের শিক্ষা pdf download, মুহাম্মদ ইকবাল কীলানী, al quraner shikkha pdf download
আল কুরআনের শিক্ষা pdf download, মুহাম্মদ ইকবাল কীলানী, al quraner shikkha pdf download

একটু পড়ুন: 

আমাদের সামনে আরো একটি উদাহরণ, উপমহাদেশে ভারত ও পাকিস্তানের বড় মোগল, যে ইতিহাসে জালালউদ্দীন আকবর নামে পরিচিত, জালালউদ্দীন আকবর আল্লাহ্র দ্বীনের ভিত্তি এ দর্শনের উপর রেখেছে যে, ইসলাম ১৪শত বছরের পুরাতন ধর্ম, এখন আমাদের একটি নুতন উন্নত ধর্ম দরকার, তাই বাদশাহ্ সালামত একটি নুতন দিন আবিষ্কার করল, যার কালেমা ছিল “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ আকবর খলিফাতুল্লাহ্”। ভারতে যেহেতু বিভিন্ন ধর্মের লোকদের বসবাস ছিল তাই এধর্মে মুসলমান ব্যতীত সমস্ত দলসমূহের সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাখা হল, অগ্নি পুজকদেরকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য শাহী মোহলে পৃথকভাবে আগুন জ্বালিয়ে আলোকিত রাখা হত এবং তার পুজা করা হত, তাদের ধর্মীয় উৎসবসমূহ সরকারীভাবে পালন করা হত, 


খৃষ্টানদেরকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য ঈসা (আঃ) এবং মারইয়ামের মূর্তি তৈরী করে তার সামনে আকবর সম্মান জানাতে দাঁড়াত, আবার চার্চেও উপস্থিত হত, হিন্দুদেরকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য হিন্দুদের মূর্তি এবং তাদের বিভিন্ন উৎসব সরকারীভাবে পালন করা হত, আকবর নিজে মাথায় তিলক ব্যবহার করত, গাভী কোরবানী করা নিষেধ করেছিল, তার মোহলে বানর এবং কুকুর পালত, বানরকে পবিত্র প্রাণীর মর্যাদা দেয়া হয়েছিল, মোহলে নিয়মিত জুয়ার আসর বসত, জ্বিন ভুতের অনুসারীদেরকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য আকবর শুধু শিকার করাই ত্যাগ করে নাই বরং মাংস খাওয়াও পরিহার করেছিল, ইসলামী বিধি-বিধানসমূহকে প্রকাশ্যে বিদ্রূপ করা হয়েছে, সূদ, জুয়া, মদ পান হালাল করে দেয়া হয়েছিল, দাড়ি মুন্ডাতে উৎসাতিহ করার জন্য আকবর নিজের দাড়ি মুন্ডন করেছিল, মোহাম্মদ, আহমদ, মোস্তফা ইত্যাদি নাম রাখা নিষেধ করা হয়েছিল, নুতন মসজিদ নির্মাণের ক্ষেত্রে বাধ্য বাধকতা জারি করা হয়েছিল, 


পুরাতন মসজিদসমূহ ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল, আযান, নামায রোযা, হজ্ব, ইত্যাদি ইবাদতের ক্ষেত্রে বাধ্য বাধকতা ছিল, বার বছরের আগে খাতনা করা নিষেধ ছিল, এর পর মেয়েদেরকে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছিল যে, তারা চাইলে খাতনা করতে পারবে আর নাচাইলে করবে না। একাধিক বিয়ে নিষেধ করা হয়েছিল, ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থাকে পঙ্গু করা হয়ে ছিল। অথচ বিজ্ঞান, দর্শন, গণিত, ইতিহাস, ইত্যাদি শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারী ছত্র ছায়ায় চলত, বাইতুল্লাহকে অবমাননা করার ইচ্ছা নিয়ে আকবর রাতে কেবলার দিকে পা দিয়ে রাত্রি যাপন করত, আকবরের এ নুতন উন্নত ধর্ম যদি পরিপূর্ণভাবে বিস্তারের সুযোগ পেত তাহলে আজ সমগ্র হিন্দুস্তান কুফরস্তানে পরিণত হত, কিন্তু আল্লাহ্র ইচ্ছা সবকিছুর উপর বিজয়ী, ঐসময়ে আল্লাহ্ শাইখ আহমদ সেরহিন্দী (রাহিমাহুল্লাহ) এর মাধ্যমে এ কুসংস্কারকে সমূলে উটপাটনের জন্য ভূমিকা রাখালেন, যার সুন্দর পদক্ষেপের ফলে আবুল আলা মওদুদী (রাহিমাহুল্লাহর) ভাষায়" শুধু হিন্দুস্তানকেই কুফরীর অতলতলে যাওয়া থেকে বাঁচান নাই, বরং এ বিশাল ফেতনা মুখথুবরে পড়ে গিয়েছিল। যদি তা কামিয়াব হতে পারত তাহলে আজ থেকে ৩/৪শ বছর আগেই এখান থেকে ইসলামের নাম নেশানা মিটে যেত। আরও...


১) বিদায় হজ্বের সময় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভাষণ দিতে গিয়ে, মানুষকে মানবাধিকার সম্পর্কে বলতে গিয়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যাপক অর্থবোধক এক বক্তব্য পেশ করেছেন যে, কিয়ামত পর্যন্ত এর বিকল্প কিছু পাওয়া সম্ভব নয়, অ্যামেরিকা এবং প্রাচ্যবাসীরা যখন একান্ত চিত্তে কোন সময় তা অধ্যায়ন করবে এবং এ অনুযায়ী আমল করার সিদ্ধান্ত নিবে, তাহলে নিঃসন্দেহে ঐ দিন থেকেই বিশ্ব ব্যাপী শান্তি ও নিরাপত্তার সয়লাভ হয়ে যাবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হে মানব মন্ডলী! নিশ্চয় তোমাদের রব একক, তোমাদের পিতাও একজন,

শুনে রাখ কোন আরাবীর অনারবীর উপর এবং কোন অনারবীর কোন আরাবীর উপর কোন বিশেষ মর্যাদা নেই, না কোন লাল বর্ণের অধিকারী কোন কৃষ্ণাঙ্গের উপর, না কোন কৃষ্ণাঙ্গের কোন লাল বর্ণের অধিকারীর উপর কোন বিশেষ মর্যাদা রয়েছে, তবে তাদের মাঝে) মর্যাদার (মাপ কাঠি) হবে তাকওয়ার ভিত্তিতে। (মোসনাদ আহমদ)

তিনি অন্যত্র আরেকটি বক্তব্যে বলেছেনঃ হে মানব মন্ডলী তোমাদের রক্ত, সম্পদ, সম্মান একে অপরের উপর সর্বদাই হারাম, এ বিষয়গুলো তোমাদের জন্য এমনি মর্যাদাবান যেমন আজকের দিন (১০ মিলহাজ্ ) এবং যেমন এই শহর (মক্কা) তোমাদের নিকট মর্যাদাবান। (বোখারী, আবুদাউদ, নাসায়ী)।

২: মানুষের জানের নিরাপত্তাকে সুদৃঢ় করার জন্য এতটুকু সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, “যে ব্যক্তি লোহার অস্ত্র দিয়ে তার ভায়ের প্রতি ইঙ্গিত করবে তার উপর ফেরেশতা ততক্ষণ পর্যন্ত অভিসম্পাত করতে থাকবে যতক্ষণ না সে তা থেকে বিরত হবে। চাই সে তার আপন ভাই হোক বা যেধরণের ভাই হোকনা কেন। (মুসলিম)

৩: অমুসলিমদের জীবনের নিরাপত্ব বিধানকে নিশ্চিত করতে গিয়ে বলাহয়েছে" যে ব্যক্তি কোন যিম্মীকে (ইসলামী রাষ্ট্রে বিধর্মী প্রজা) বিনা কারণে হত্যা করল, সে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাবে না । (বোখারী)


৪: যুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয়ে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবাগণকে এ নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন যেন নিহতদেরকে মোসলা ( নাক,কান) কর্তন না করা হয়। শত্রুকে ধোঁকা দিয়ে হত্যা করা যাবে না, শত্রুকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে হত্যা করা যাবে না, শত্রুকে নিরাপত্তা দেয়ার পর তাকে হত্যা করা যাবে না, নারী, শিশু, শ্রমিক, ইবাদত কারীদেরকে হত্যা করা যাবে না, ফলবান বৃক্ষ কাটা যাবে না, চতুপদ জন্তু হত্যাকরা যাবে না, অঙ্গীকার ভঙ্গ করা যাবে না, যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে তাদের জান মালের নিরাপত্তা ঐভাবে দিতে হবে যেভাবে মুসলমানদের জানমালের নিরপত্তা বিধান করা হয়ে থাকে। (বোখারী, মোয়ত্বা, আবুদাউদ, ইবনু মাযা)

ইসলামের এ দিক নির্দেশনা শুধু মৌখিকই ছিল না বরং মুসলমানরা সর্বকালে যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে এ দিক নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেছে।

আমরা এখানে উদাহরণ সরূপ কিছু ঘটনা উল্লেখ করতে চাইঃ

১:  ৮ম হিযরীর সা'বান মাসে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খালেদ বিন ওলীদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) কে এক কাবিলা( বংশের) লোকদেরকে দাওয়াত দেয়ার জন্য পাঠালেন, ভুল বুঝাবুঝির ভিত্তিতে কিছু সংখ্যক লোককে কাফের মনে করে হত্যা করা হল, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন বিষয়টি জানতে পারলেন তখন উভয় হাত তুলে দোয়া করলেন “হে আল্লাহ্ খালেদ যা করেছে তা থেকে আমি দায়িত্ব মুক্ত। এরপর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিহতদের রক্ত পণ এবং অনান্য ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন।


২:  ৪ হিযরীর সফর মাসে বি'রে মাউনার বেদনাদায়ক ঘটনার পর, যেখানে আমর বিন উমাইয়া জমেরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন, মদীনায় ফিরে আসার সময় রাস্তায় কিলাব বংশের দু'ব্যক্তিকে শত্রু পক্ষের লোক মনে করে হত্যা করেছিল, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এঘটনা জানতে পেরে তিনি তাদের উভয়ের রক্তপন আদায় করেন।

৩: ২য় হিযরীর রজব মাসে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি গোয়েন্দা দল সংবাদ সংগ্রহের জন্য পাঠালেন, যাদের কোরাইশদের একটি গ্রুপের সাথে সংঘর্ষ হল, সাহাবাগণ নিজেদের মাঝে পরামর্শক্রমে কোরাইশদের গ্রুপটির উপর আক্রমন করল, ফলে কোরাইশদের এক ব্যক্তি নিহত হল, দু'জন গ্রেফতার হল, একজন পালিয়ে গিয়েছিল, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এঘটনা জানতে পেরে বললেনঃ আমি তোমাদেরকে হারাম (নিষিদ্ধ মাসে) যুদ্ধ করার অনুমতি দেই নাই, ফলে তিনি দু'জন বন্দীকেই মুক্তি দিয়ে দিলেন এবং নিহত ব্যক্তির রক্ত পন আদায় করলেন।

আল কুরআনের শিক্ষা pdf download করতে নিচে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন।

Post a Comment

স্প্যাম কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন! ধন্যবাদ, পিডিএফ বই ডাউনলোড সমস্যা হচ্ছে? এখানে দেখুন>যেভাবে PDF ডাউনলোড করবেন?

Previous Next

نموذج الاتصال