তালাকের মাসায়েল pdf download, তালাকের মাসআলা pdf ডাউনলোড, talaker masayel pdf |
ব্যক্তিগত জীবন হোক আর সামাজিক, ইসলাম স্বভাবগতভাবে ভালবাসা, অন্তরিকতা, ঐক্যতা ও নিয়মতান্ত্রিকতার ধারক ও বাহক। পক্ষান্তরে বিভক্তি, বিচ্ছিন্নতা, অনিয়ম, ૩ দলাদলীকে ইসলাম নিকৃষ্ট কাজ মনে করে, নিয়মতান্ত্রিকতা ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ জীবন-যাপন করার ব্যাপারে ইসলাম এ নির্দেশও দিয়েছে যে, যদি তিন জন লোক মিলে কোথাও কোন সফর করে তাহলে তারা যেন নিজেরদের মধ্য থেকে একজনকে আমীর নির্ধারণ করে সফর করে। (আবুদাউদ)
আত্মীয়তার সম্পর্ক ও প্রতিবেশির হকের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না”। (বোখারী ও মুসলিম)
অন্য এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আত্মীয়তার সম্পর্ক আল্লাহ্র আরশের সাথে ঝুলন্ত আছে,
আর সোখানে থেকে সে বলছে, “যে ব্যক্তি আমার (আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখবে তার
সাথে আল্লাহ্র সম্পর্ক অটুট থাকবে, আর যে এসম্পর্ক ছিন্ন করবে তার সাথে আল্লাহ্র সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হবে”। (বোখারী ও মুসলিম)
সাধারণ মুসলমানদেরকে মিলে মিশে আন্তরিক পরিবেশে থাকার ব্যাপারে এতটা উৎসাহিত করা হয়েছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মুসলমানের জন্য অন্য কোন মুসলমানের সাথে তিন দিনের অধিক সময় ধরে সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকা বৈধ নয়, আর যে ব্যক্তি তিন দিনের অধিক সময় ধরে সম্পর্ক ছিন্ন করা অবস্থায় মারা গেল সে জাহান্নামী। (আহমদ, আবুদাউদ)
অন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে “যে ব্যক্তি বছর ব্যাপী সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকল, তাহবে তার
অধিকার নষ্ট করার সমতুল্য অপরাধ” (আবুদাউদ)। প্রচলিত সরকার ব্যবস্থায় ষড়যন্ত্র ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি রোধে তিনি বলেছেন, তোমাদের উপর যদি নাক ও কান কাটা কোন লোককে সরাকার বানানো হয়, যে তোমাদেরকে কোরআ’ন
ও হাদীস মোতাবেক পরিচালিত করে, তোমরা তার নির্দেশ পালন করবে। (মুসলিম)
তিনি আরো বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যদি তার সরকারের মধ্যে ব্যতিক্রম কিছু দেখে তাহলে তার ধৈর্য ধরা উচিত, কেননা যে ব্যক্তি ষড়যন্ত্র করে মুসলমানদের দল থেকে এক বিঘা পরিমাণ দূরে চলে যাবে সে জাহিলিয়্যাতের (কাফের) অবস্থায় মৃত্যু বরণ করবে। (বোখারী ও মুসলিম)
এসমস্ত দলীলের আলোকে একথা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে ইসলাম নিয়ম অনুবর্তীতা, ঐক্যতা, ভ্রাতিত্বতাকে কত বেশি গুরুত্ব দেয়। এত গেল সমাজের সাধারণ লোকদেরকে পরস্পরের মাঝে সু সম্পর্ক বজিয়ে রেখে জীবন যাপনের নির্দেশ, নারী পুরুষের বৈবাহিক জীবন সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টি এই যে, এ সম্পর্ক চির দিনের জন্য জীবন সঙ্গী ও একে অপরের সুখে ও দুখে সমঅংশীদারীর সম্পর্ক। এ জন্য আল্লাহ্ এ উভয়ের মাঝে আন্তরিকতা ও ভালবাসার বিশেষ সম্পর্ক সৃষ্টি করেন, ফলে উভয়েই একে অপরের সংস্পর্শে শান্তি অনুভব করে, দাম্পত্য জীবনের এ ক্ষুদ্র পরিসরকে ইসলাম নিয়মানুবর্তীতা, ঐক্য ও বন্ধুত্বের প্রতি কত গুরুত্ব দিয়ে থাকে তা অনুমান করা যায় ঐ সমস্ত বিধি-বিধান থেকে যা ইসলাম উভয় দম্পতির জন্য নির্ধারণ করেছে। স্বামীর অধিকার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি আমি আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকে সেজদা করার অনুমতি দিতাম তাহলে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম। যে সেযেন তার স্বামীকে সিজদা করে। (তিরমিযী)
অন্য এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে- “ ঐ সত্ত্বার কসম যার হাতে আমার প্রাণ। স্বামী তার স্ত্রীকে স্বীয় বিছানায় আহ্বান করলে স্ত্রী যদি তা প্রত্যাক্ষাণ করে, তাহলে ঐ সত্ত্বা যিনি আকাশে আছেন তিনি অসন্তুষ্ট হন, যতক্ষণ না তার স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়। (মুসলিম) অন্য এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, স্বামী তার স্ত্রীর জন্য জান্নাত বা জাহান্নামের উপায়। (আহমদ)
সাথে সাথে নারীর অধীকারের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে স্বামীকে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যে, নিজে যা খাও স্ত্রীকেও তা খাওয়াও, নিজে যা ব্যবহার কর স্ত্রীকেও তা ব্যবহার করতে দাও, আর স্ত্রীর ব্যাপারে খারাপ ধারণা করবে না। (মুসলিম)
* "স্ত্রীকে গালি দিবে না।” (ইবনে মাযা)
স্ত্রীর সাথে গন্ডগোল করবে না, তার একটি অভ্যাস যদি অপছন্দ হয় তাহলে অন্যটি পছন্দ হবে। (মুসলিম)
স্ত্রীকে কাজের মেয়ের মত মারবে না।” (বোখারী)
স্ত্রী তোমাদের নিকট বন্দীর ন্যায় তার ব্যাপারে ভাল কথা গ্রহণ কর। (তিরমিযী) তিনি আরো বলেছেনঃ “তোমাদের মধ্যে সবোর্ত্তম সে যে তার স্ত্রীর নিকট সর্বোত্তোম”। (তিরমিযী) চিন্তা করুন! আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলে প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী, কোন নারী বা পুরুষ তার দাম্পত্য জীবনে উল্লেখিত প্রমাণাধি অনুধাবন করে, ইসলাম প্রবর্তিত পারিবারিক জীবনকে অহেতুক কারণে তুচ্ছ জ্ঞান করতে পারে?
মানুষের কৃষ্টি-কালচারে পার্থক্য থাকা সত্যেও সমস্যা মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছিন্ন বিষয়, বিশেষ করে জীবনের অন্যান্য দিকের তুলনায় দাম্পত্য জীবনে সমস্য একটু বেশি। পরিলক্ষিত হয়। ইবলীসের ছাত্ররা সর্বকালে সর্বত্র মানুষের দাম্পত্য জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করতে সক্রিয় থাকে। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইবলীসের দরবার পানির উপর, সেখান থেকে সে সর্বত্র তার ভক্তদেরকে প্রেরণ করে থাকে, ভক্তদের মধ্য থেকে তার নিকট সবচেয়ে প্রিয় সে যে সবচেয়ে বেশি ফেতনা বাজ। ভক্তরা ফিরে এসে তার নিকট রিপোর্ট পেশ করে, কেউ বলে আমি অমুক অমুক কাজ করেছি, উত্তরে ইবলীস বলে তুমি কিছুই করতে পার নাই। কেউ বলে যে, আমি অমুক স্বামী ও স্ত্রীর পিছনে লেগে তাদের মাঝে সম্পর্ক ছিন্ন করে ছেড়েছি, ইবলীস তাকে তখন নিজের পাশে দরবারে বসায় এবং বলে তুমি ঠিক কাজটি করেছ। (মুসলিম)
তালাকের মাসায়েল pdf download করতে নিচে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন।