জবাব আরিফ আজাদ pdf ডাউনলোড

জবাব আরিফ আজাদ pdf download, jobab arif azad pdf download, জবাব বই pdf, jobab pdf
জবাব আরিফ আজাদ বই pdf download, jobab arif azad pdf download, 


বিশ্বজগতের অস্তিত্ব প্রমাণে আমাদের ইন্দ্রিয়ভিত্তিক অনুভূতি যথেষ্ট নয়। তাই শুধু ইন্দ্রিয়ানুভূতিকে জগতের অস্তিত্বশীলতার প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা গ্রেফ একটি অনুমান। দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল তার দর্শনের সমস্যাবলি গ্রন্থে অনেক আগেই দেখিয়েছেন—ইন্দ্রিয় উপাত্তের সঙ্গে কোনো কিছুর অস্তিত্বের নিশ্চিত সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ ইন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞান দ্বারা কোনোকিছুর বাস্তব অস্তিত্ব সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব না। ডেভিড হিউমও একই মত দিয়েছেন। আমেরিকার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক জর্জ সান্তায়ানা এমন বিশ্বাসকে মজা করে বলেছেন 'এনিমেল ফেইথ' মানে অযৌক্তিক বিশ্বাস (১) অথচ এমন একটি বিশ্বাসকে সত্য ‘ধরে' নিয়েই এই জগতকে বিজ্ঞান ‘অস্তিত্বশীল বলে জ্ঞান করছে।

দুই. এই বিশ্বজগৎ আমাদের পক্ষে ঠিকঠাক বুঝে ওঠা সম্ভব। অন্যভাবে বললে, আমাদের চিন্তাশক্তির ওপর আমরা ভরসা করতে পারি। এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-লেখক মারগারেট ভার্থেইম বলেন —

আমরা সবাই কিছু-না-কিছু বিশ্বাস করি এবং বিজ্ঞান নিজেও কিন্তু একগাদা বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। শুরুতেই বলা যায়, বিজ্ঞান এই বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে আছে যে, বিশ্বজগৎকে আমরা বুঝতে পারি এবং আমাদের উদ্ভাবন-

ক্ষমতা এবং আরও সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম যন্ত্রপাতির ব্যবহার দ্বারা আমরা শেষমেশ সব জেনে যাব।


আমরা যে ‘যৌক্তিক চিন্তাক্ষমতাসম্পন্ন জীব'—এটাও কিন্তু বিজ্ঞানের অনুমান। যদিও বিবর্তনের দর্শন এই অনুমানকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। কারণ, এ মতে মানুষ কেবলই দীর্ঘ এক বিবর্তন-প্রক্রিয়ার আকস্মিক ফল। যে প্রক্রিয়া নিজেই জড়, এলোমেলো, উদ্দেশ্যহীন। বিবর্তনের চাবিকাঠি হলো— ক্রমাগত জীবন-সংগ্রামে যোগ্যতমের জয়। এই প্রক্রিয়ায় এমন প্রজাতি আবির্ভূত হবে, যা কেবল বেঁচে থাকা আর বংশধর রেখে যাওয়ার মতো যথেষ্ট যোগ্য, ব্যস। সত্যের সন্ধান করা বিবর্তনের লক্ষ্য নয়। স্রেফ বেঁচে থাকা আর আবিষ্কারের খোঁজ—দুটো দুই জিনিস। তেলাপোকা মহাশয়ও তো বেঁচে আছে; ও নিউক্লিয়ার হলোকাস্টও সয়ে নেয়।

কিন্তু ওকে কি কখনো দেখা গেছে, বসে বসে রবার্ট ফ্রস্টের কবিতা পড়তে কিংবা মহাবিশ্ব-উৎপত্তির ইতিহাস বোঝার জন্য ভূতলে গবেষণা করতে? আমাদের চিন্তাক্ষমতার নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে স্বয়ং ডারউইন সাহেবও অনিশ্চিত ছিলেন। ডিএনএ'র ডাবল হেলিক্স মডেল প্রণেতাদ্বয়ের একজন, নোবেল বিজয়ী সুপরিচিত নাস্তিক বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকও এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন )

সর্বোপরি বৈজ্ঞানিক সত্য আবিষ্কারের জন্য আমাদের অত্যন্ত বিকশিত মস্তিষ্কটি বিবর্তিত হয়নি; বরং স্রেফ বেঁচে থাকা আর বংশধর রেখে যাওয়ার জন্য আমাদের যথেষ্ট দক্ষ করে তুলতে বিবর্তিত হয়েছে।

তিন. প্রকৃতি সকল ক্ষেত্রে এক নিয়মানুসারী (Uniformity of Nature)। ফলে, একটি পরীক্ষা একই পরিবেশে কয়েকবার চালালে একই ফল পাওয়া যাবে। এর আরেক বিবরণ হলো— প্রাকৃতিক সূত্রগুলো অপরিবর্তনীয়। এগুলো শুরুতে যেমন ছিল, আজও তেমন আছে আর ভবিষ্যতেও তেমনই থাকবে। এটাও অনুমান মাত্র।

ডেভিড হিউমও এই অনুমানকে যথার্থ মনে করতেন না। একদল কসমোলজিস্ট মনে করেন—প্রকৃতির সূত্রগুলোও বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করেছে, এখনকার সূত্রগুলো অতীতেও এমন ছিল—এমনটা না-ও হতে পারে।

চার. আমাদের চারপাশে যা কিছু ঘটে সেসব প্রাকৃতিক ঘটনার জাগতিক ব্যাখ্যা দেওয়াই যথেষ্ট। বস্তুজগতের বাইরের কিছু বা প্রাকৃতিক নিয়মের বাইরের কিছুকে কোনো প্রাকৃতিক ঘটনার ব্যাখ্যাস্বরূপ টেনে আনা যাবে না। এই বিশ্বাসকে বলা হয় Methodological Naturalism বা পদ্ধতিগত প্রকৃতিবাদ। এটাই বিজ্ঞানের সর্বপ্রধান অনুমান বা বিশ্বাস ।

এর সম্পর্কে না জানার কারণে অনেকে ভুল ধারণা লালন করেন, বিজ্ঞান স্রষ্টাকে খুঁজে পায়নি বা বিজ্ঞান কোনো পরমসত্তাই বিশ্বাস করে না। আসল কথা হলো— বিজ্ঞান স্রষ্টাকে খুঁজতে যায় না। স্রষ্টা আছে কি নেই, সে বিষয়ে বিজ্ঞান নীরব হয়ে বসে থাকে। আমেরিকার বিখ্যাত ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস-এর বিবৃতিতে এ ব্যাপারটি আরও পরিষ্কার হয়ে ওঠে—

বিজ্ঞান হলো প্রাকৃতিক জগৎ সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের একটি উপায়। প্রাকৃতিক জগৎ সম্পর্কে জাগতিক ব্যাখ্যা প্রদানেই এটি সীমাবদ্ধ। অতিপ্রাকৃত কিছু আছে কি না, সে বিষয়ে বিজ্ঞান কিছুই বলতে পারে না। স্রষ্টা আছে কি নেই, এ প্রশ্নের ব্যাপারে বিজ্ঞান নীরব ।

যদি সকল তথ্য-উপাত্ত কোনো স্রষ্টার দিকে ইঙ্গিত করে, তবে তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়াই বিজ্ঞানের কাজ! জাগতিক ব্যাখ্যা প্রদানেই বিজ্ঞান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জীববিজ্ঞানী স্কট টড বিখ্যাত সায়েন্স জার্নাল Nature-এ প্রকাশিত এক চিঠিতে এই বাস্তবতা স্বীকার করে বলেন—


জগতের সকল উপাত্ত যদি কোনো বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন স্রষ্টার দিকে ইঙ্গিত করে, তারপরও এমন অনুকল্প বিজ্ঞান থেকে বাদ দেওয়া হয়; কারণ, এই ব্যাখ্যা প্রকৃতিবাদী নয়। তবে ব্যক্তি হিসেবে কোনো বিজ্ঞানী এমন বাস্তবতাকে সাদরে গ্রহণ করতে পারেন—যা (পদ্ধতিগত) প্রকৃতিবাদের ঊর্ধ্বে। (২)

বৈজ্ঞানিক মহলে আরও কিছু ধারণা জেঁকে বসে আছে অনেক দিন হলো। বিজ্ঞানী রুপার্ট শেন্ড্রেক তার গ্রন্থে এমন দশটি বিশ্বাসকে তালিকাবদ্ধ করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে—এই প্রতিটি বিশ্বাসেরই ব্যত্যয় ঘটেছে, বিপরীতে প্রমাণ মিলেছে। (৩) এদিকে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রগ্রেসিভ সায়েন্স ইন্সটিটিউটের পরিচালক, নাস্তিক বিজ্ঞান-দার্শনিক প্লেন বরচার্ড The Ten Assumptions of Science Towards a New Scientific Worldview গ্রন্থে বিজ্ঞানের দশটি দার্শনিক অনুমানকে লিপিবদ্ধ করেছেন।

জবাব আরিফ আজাদ pdf Download করতে নিচে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন।

Post a Comment

স্প্যাম কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন! ধন্যবাদ, পিডিএফ বই ডাউনলোড সমস্যা হচ্ছে? এখানে দেখুন>যেভাবে PDF ডাউনলোড করবেন?

Previous Next

نموذج الاتصال