ডাক দিয়ে যাই তোমায় হে মুসলিম তরুণী pdf download, উসতাজ হাসসান শামসি পাশা বই pdf |
যখন আমরা সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখি, কোনো এক আরব দেশের মাধ্যমিকের যুবক ছাত্রদের মধ্যে ৪৫% তরুণই এ বয়সে হারাম যৌন-সম্পর্কে লিপ্ত! তাদের মধ্যে ২০% যুবক মদ্যপান ও নেশা সেবন করছে, অন্তত একবার হলেও!
তালাকের তালিকা দেখে থমকে যেতে হয় যে, এক আরব রাষ্ট্রের রাজধানীতে তালাকের হার ৫০% এ পৌঁছে গেছে। অর্থাৎ প্রতি দুটি দাম্পত্য জীবনের মধ্যে একটি তালাকের মাধ্যমে শেষ হয়ে গেছে!
আমরা আশ্চর্য হই, যখন শুনি, একই ঘরের যুবক-যুবতিরা পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা
টিভির সামনে বসে থাকে; যেন সেসব প্রোগ্রামের কোনো তামাশাময় অংশ
তাদের হাতছাড়া না হয়ে যায়।
আমরা দেখছি, মিডিয়া সত্য-মিথ্যার মাঝে মিশ্রণ করে ফেলেছে।... বরং বলা ভালো, নির্দিষ্ট মহলের স্বার্থের জন্য মিডিয়া মিথ্যাকে সুন্দর করে উপস্থাপন করে ছড়িয়ে দিচ্ছে।... সংস্কৃতি চর্চা, স্বাধীনতা চর্চার নামে চারিত্রিক অধঃপতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজকে।...
টিভি চ্যানেল, পত্রিকা, রেডিও, ইন্টারনেট সব মাধ্যমই অবাধ্যতা ও নৈরাজ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতিটি মিডিয়া মাধ্যমই এমন বাজে কন্টেন্ট প্রচার করছে, যা আমাদের যুবক-যুবতিদের ধ্বংসের পথে ধাবিত করছে। নির্বুদ্ধিতা ও অসারতা প্রচার করছে।... কুপ্রবৃত্তির দিকে ধাবিত করছে।... ইতিবাচকতাকে গ্রাস করছে। সমাজকে অবক্ষয়ে নিপতিত করছে।... এমনকি দেখা যায় রাস্তাঘাটে যুবক-যুবতিরা বিকৃত ফ্যাশন করে বেড়ায়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় আত্মপরিচয়হীন কিছু মানুষের আনাগোনা, যাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই, যাদের কেউ পুরুষত্ব থুইয়েছে, কেউ নারীত্বের অলংকার হারিয়েছে, কেউ স্থানের পবিত্রতা নষ্ট করেছে, সবাই ভুল ও নীচতার গর্তে গিয়ে পড়েছে।
* এ সময়ে এসে আমাদের মনে হতে পারে, আমরা একটা ভয়ংকর স্বপ্ন দেখছি; বরং বলা ভালো, আমরা একটা মহামারির মাঝে রয়েছি, যা আমাদেরকে প্রতিটি দিক থেকে ঘিরে আছে।....
যখন একটা পরিবারের রক্ষণাবেক্ষণ করে দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ একজন মহিলা, যার না আছে পার্থিব জ্ঞান, আর না আছে দ্বীনের জ্ঞান যে তার মুখাবয়বকে নিকৃষ্ট রঙের মেকাপে রাঙাতে ব্যস্ত থাকে, মুখ বাঁকা করে কথা বলে, যেন মনে হয় যে, সে বিদেশ থেকে পড়ে এসেছে—এমন মা কখনো সন্তানদের সঠিক শিক্ষা দিতে পারে না; বরং সন্তানের মৌলিক ভিত্তি নষ্ট করে দেয়, সন্তানের ব্যক্তিত্বকে ধ্বংস করে দেয়। ফলে সন্তানের মাঝে কোনো রকম আত্মসম্মান থাকে না, পুরুষত্ব থাকে না, দায়িত্ব বহনের সক্ষমতা থাকে না। এরপর তখন আসে সবচেয়ে বড় বিপদ, যখন এমন কোনো সন্তান জাতির পরিচালনার দায়িত্ব পায়। এদের মতো লোকদের কারণেই অনেক জাতি, অনেক সভ্যতা ধ্বংস হচ্ছে!
যখন মা তার সন্তানদের প্রতিপালনের দায়িত্ব দিয়ে দেয় সেবিকার হাতে, সেবিকা সন্তানকে খাওয়ায়, পরায়, দিন-রাত কোলে-পিঠে করে শিশুকে বড় করে তোলে, বাল্যবয়সে ঘুমপাড়ানি গান শুনিয়ে ঘুম পাড়ায়, ছোট শিশুর জন্য গান গায়—তখন শিশুর অন্তরে জন্মদাত্রী মা ও জন্মদাতা বাবা নয়; বরং সেবিকার মমতা ও ভালোবাসা প্রোথিত হয়।
তাই এ প্রজন্মকে আমরা নাম দিতে পারি 'সেবিকার সন্তানদের প্রজন্ম'। আবার এটাও বলতে পারি যে, আত্মভোলা, তুচ্ছ প্রজন্ম যে প্রজন্মের বাবা-মা জানে না, তাদের সন্তান কোথায় রাত-দিন কাটিয়ে আসে। জানে না, কোন পথে চলছে তাদের সন্তান, কোন ঘাটে তার তরি ভিড়ছে, কোন দিকে তার গাড়ি চলছে !
এটাকে আমরা ‘মহাসংকট' আখ্যা দিতে পারি। ...
অন্যদিকে আমরা আরেকটা প্রজন্মকে দেখি, যারা এমন পঙ্কিলতার বাধ্যবাধকতা মানতে নারাজ, যারা বাতিলের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করে, খাঁটি ইসলামকে
* হৃদয়ে লালন করে, কোনো কুপ্রবৃত্তি বা হীন প্রবণতা বা পশ্চিমা ঢেউ তাদের টলাতে পারে না।
এ প্রজনই হচ্ছে আমাদের আশা, তারাই ভবিষ্যৎ, এ প্রজন্মই সাহায্য ও তত্ত্বাবধানের হকদার।....
একজন তরুণী তার কৈশোরে মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। এ সময়ে তার নারীত্ব ও ব্যক্তিত্ব পূর্ণতা পায়। তখন সে বিশেষ জরুরি মুহূর্ত পার করে মানসিক ও মেজাজগত দিক থেকে। কখনো বিদ্রোহী মনোভাব পোষণ করে সে তার বাস্তবতার বিরুদ্ধে, কখনো পরিবারের বিরুদ্ধে। এমন সময়ে ক্রোধ ও অস্বীকৃতির দিকে ঝুঁকে যায় সে, প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ফেলে খুব দ্রুত। সবশেষে তার আচরণের জন্য নিজেই লজ্জিত হয়। কখনো কখনো এ স্তরটা কয়েক বছর ধরে চলতে থাকে। তাই এমন বয়স যারা পার করে, সেসব যুবতির বিশেষ রক্ষণাবেক্ষণ ও আচরণের দরকার হতে পারে।....
একজন সচেতন মা জানেন, তার মেয়ে কখন বয়সের কোন স্তর পার করছে। সচেতন মা তার মেয়ের সাথে নৈকট্য বাড়িয়ে দেয়। তার সাথে বান্ধবীর মতো থাকে। তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। তাকে দ্বীন শেখায়, সচ্চরিতের সবক দেয়, জীবন-অভিজ্ঞতার কথা শোনায়।
প্রজ্ঞাবান মা তিনিই হন, যিনি শান্তভাবে নসিহত করেন, দূরে থেকেও খেয়াল করেন মেয়ের অবস্থা, শাস্তি নয় বরং কখনো কখনো তিরস্কার করে সঠিক পথে রাখেন মেয়েকে, মেয়ের সাথে এমন অবস্থান তৈরি করেন—যেন দুজন পরস্পরের বান্ধবী। ফলে মা তার মেয়েকে যথাযথ সম্মান করতে পারেন, তার আবেগ-অনুভূতির যথাযথ যত্ন নিতে পারেন। মেয়েকে দায়িত্ববোধ শেখাতে পারেন। পোশাকের শালীনতা, আচরণের আদব ও প্রজ্ঞাময় কর্মঠতা শেখাতে পারেন।
নিঃসন্দেহে একজন তরুণীর তার কৈশোরে গ্রহণ করা ইমানি প্রতিপালন তার পুরো জীবনকে সাজাতে ও ফলপ্রসূ করতে সাহায্য করবে।
* একজন যুবতি এ বয়সে বহু ছলনাময় আহ্বান ও মিডিয়ার বহু পথভোলানো কথার শিকার হয়।...
তাই এ কথা জিজ্ঞেস করা আমাদের দায়িত্ব যে, 'কেন তারা মুসলিম নারীদের
ওপর এতটা জোর দিচ্ছে যে, মুসলিম নারীর স্বাধীনতা প্রয়োজন?”
খারাপ দৃষ্টি থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য একজন মুসলিম নারীর বোরকা পরার ইবাদত থেকে বিচ্যুত করে পোশাকহীন করাই কি স্বাধীনতা? এমন স্বাধীনতার আদৌ প্রয়োজন রয়েছে কি?
সন্তানদের প্রতিপালন করা, সঠিকভাবে তাদের পরিচর্যার ইবাদত থেকে বঞ্চিত
করাই কি স্বাধীনতা? এমন স্বাধীনতার আদৌ প্রয়োজন রয়েছে কি?
কেন তারা মরণপণ যুদ্ধ করে সচ্চরিত্রা নারীদেরকে রাস্তায় পোশাকহীন উলঙ্গ করে নামিয়ে আনতে চাচ্ছে?!
ডাক দিয়ে যাই তোমায় হে মুসলিম তরুণী pdf Download করতে নিচে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন।