কুরআন থেকে প্রশান্তি লাভ pdf download মুফতি ইসমাঈল মেন্ক, quran theke proshanti lav pdf |
একটু পড়ুন:
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তা'আলার। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক
তাঁর শেষ রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর।
ইতিপূর্বে মুসলিম ভিলেজ প্রকাশনী থেকে মুফতি ইসমাঈল মেনকের 'মোটিভেশনাল মোমেন্টস-১' এবং 'মোটিভেশনাল মোমেন্টস-২' নামে দুটো বই অনূদিত হয়ে প্রকাশিত হয়েছে। বই দুটো ছিল মুফতি মেনকের ফেসবুক পোস্টের সংকলন। বই দুটো একটু ভিন্নধর্মী হওয়ায় অনেক পাঠকের কাছে বিষয়টি নতুন লাগে এবং তারা আরও বেশি লেখা সংবলিত মুফতি মেনকের বই প্রকাশের অনুরোধ করে। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা মুফতি মেনকের এই বইয়ের অনুবাদে হাত দিই। অনুবাদ শেষ হয় ২০২০ সালেই কিন্তু বইটি অন্যান্য বইয়ের ভিড়ে চাপা পড়ে যায়।
"কুরআন থেকে প্রশান্তি লাভ' নামের এই অনূদিত বইটি মুফতি মেনকের অফিসিয়াল ইউটিউব পেজের একটি লেকচার সিরিজের অনুবাদ, যেখানে কুরআনের বিভিন্ন আয়াতের মর্মার্থ বিশ্লেষণের চেষ্টা করা হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন বিষয়কে বেশ সংক্ষেপে ও চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আশা করি বইটির অনুবাদ পাঠকদের জন্য উপকার বয়ে আনবে এবং কুরআন উপলব্ধি ও অনুসরণে তাদের জন্য পাথেয় হিসেবে কাজ করবে, ইনশাআল্লাহ ।
বইটি সর্বাঙ্গীন সুন্দরভাবে প্রকাশের জন্য চেষ্টার অভাব ছিল না। তথাপি তাতে ভুল থেকে যাওয়া স্বাভাবিক। সম্মানিত পাঠকগণ সেসব ভুলকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, এই কামনা করি।
* আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। প্রিয় ভাই ও বোনেরা !
আমরা আপনাদের নিকট 'কুরআন থেকে প্রশান্তি লাভ' শিরোনামে অত্যন্ত মূল্যবান কিছু রচনা নিয়ে হাজির হয়েছি, যার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার নিকট নিজেকে সমর্পণ করা এবং তাঁর কালাম তথা কুরআনের আয়াতসমূহের গভীর উপলব্ধির মাধ্যমে প্রশান্তি হাসিল করা।
আমরা সকলেই প্রশান্তি, পরিতৃপ্তি ও সফলতার পেছনে ছুটি। আর আমরা যাতে এই জিনিসগুলো লাভ করতে পারি, তার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা'আলা বহু আয়াত, বহু আসমানি কিতাব বা গ্রন্থ নাজিল করেছেন। আল্লাহর নাজিল করা এসব ঐশী কালাম থেকে আমরা প্রশান্তি লাভ করতে পারবো কি পারবো না, তা নির্ভর করে আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা-র ঐশ্বরিক পরিকল্পনা আমরা কতটুকু উপলব্ধি করতে পেরেছি, তার ওপর। কেননা, যখনই আমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা-র ঐশ্বরিক পরিকল্পনা উপলব্ধি করতে সক্ষম হবো, কেবল তখনই আমরা প্রশান্তি লাভ করতে পারবো।
মনে রাখবেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা'আলা যখন আমাদেরকে সৃষ্টি করেন, তখন তিনি আমাদের সাথে এই প্রতিজ্ঞা করেননি যে, আমরা দুনিয়ার সব থেকে ধনী বা প্রভাবশালী মানুষ হবো, বরং তিনি আমাদের সাথে এই প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ হয়েছেন যে, আমরা যদি তাঁর বলে দেওয়া পথের অনুসরণ করি, তবেই আমরা সুখ এবং প্রশান্তির আশীর্বাদে সিক্ত হবো।
আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে প্রশান্তি দান করুন।
* আপনি কি জানেন?
যখন আমরা কুরআন তিলাওয়াত করবো, তখন আমরা কীভাবে তিলাওয়াত আরম্ভ করবো? আমরা বলবো - -
أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّحِيمِ
বিতাড়িত শয়তান থেকে আমি আল্লাহর আশ্রয় চাচ্ছি।
যখন আমরা কুরআন তিলাওয়াতে মশগুল হবো, তখন এই বাক্য দিয়ে আমাদের তিলাওয়াত শুরু করা উচিত। কেননা, আমাদের জীবনে যদি শয়তানের অনুপ্রবেশ থাকে, তবে কখনোই আমরা প্রশান্তি লাভ করতে পারবো না।
তাই আপনার এবং আমার জন্য আবশ্যক হচ্ছে: আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা-র সাহায্য প্রার্থনা করা, যাতে তিনি আমাদেরকে অভিশপ্ত শয়তান এবং তার কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা করেন।
আমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা-র ঐশী কালাম তথা কুরআন তিলাওয়াত আরম্ভ করতে যাচ্ছি, তাই আমাদেরকে তো আরও বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে শয়তান আমাদের মনকে কলুষিত করতে না পারে। অন্যথায় আমরা কুরআনের আয়াতকে ভুলভাবে উপলব্ধি করে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যেতে পারি।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদেরকে রক্ষা করুন।
* অন্যের সাথে নিজের তুলনা না করা এবং আচার-আচরণে বিনয় চর্চা
আমাদের অনেকেরই একটি মন্দ স্বভাব রয়েছে, আর তা হলো: নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা। অন্যদিকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি আমাদের প্রত্যেককেই নিয়ামত দিয়েছেন। আর নিয়ামত দেওয়ার ধরন সবার ক্ষেত্রেই অনন্য ও স্বতন্ত্র। আপনি জানেন না, অন্যদেরকে কী থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে এবং তাদেরকে এমন সব জিনিস দেওয়া হয়েছে, যা আপনি চাচ্ছেন, কিন্তু তাদের থেকে আল্লাহ তা'আলা যেসব জিনিস নিয়ে গিয়েছেন, সেই একই জিনিসগুলো যদি আপনার কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হতো, তবে হয়তো আপনি টিকে থাকতে পারতেন না বা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতেন। আর এ কারণে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
*আর তোমরা এমন সব বিষয়ে আকাঙ্ক্ষা কোরো না, যাতে তিনি তিনি তোমাদের একের ওপর অন্যদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করে, তা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে, তা তার অংশ এবং আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করো। নিশ্চিতভাবে আল্লাহ সর্ববিষয়ে জ্ঞাত। [সুরা আন-নিসা, ৪:৩২]
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা যদি আপনাকে পুরুষ বানিয়ে থাকেন, তবে আল-হামদুলিল্লাহ। আর তিনি যদি আপনাকে নারী বানিয়ে থাকেন, তাহলেও আল-হামদুলিল্লাহ। তিনি যদি আপনাকে কিছু দিয়ে থাকেন, তবে আল-হামদুলিল্লাহ। আর তিনি যদি আপনার থেকে কিছু জিনিস নিয়ে নেন,
*ধৈর্যশীল হওয়া এবং কোমল ও উদার মানসিকতার প্রয়োজনীয়তা
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের থেকে এই প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন যে, তিনি আমাদেরকে নানা উপায়ে পরীক্ষা করবেন। সবর বা ধৈর্য তাঁর এই পরীক্ষাগুলোর মাঝে অন্যতম।
আল্লাহ তা'আলা এটা দেখতে চান যে, আমরা আমাদের এই দুনিয়ার জীবনে ধৈর্য ধারণ করি এবং তা দেখার জন্য তিনি আমাদের জীবনে এমন এমন পরিস্থিতি ও বিষয়ের আবির্ভাব ঘটাবেন, যা আমাদের থেকে ধৈর্যের পরীক্ষা নেবে। এ কারণে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
তোমরা কি এটা ভেবে নিয়েছো যে, তোমরা জান্নাতে (কোনো পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়া ছাড়াই) প্রবেশ করবে, অথচ আল্লাহ এখনো অবগত হননি যে, তোমাদের মধ্যে কারা তাঁর পথে সংগ্রাম করেছে এবং কারা ধৈর্যশীল। [সুরা আলে-ইমরান, ৩:১৪২
এই আয়াতে আল্লাহ তা'আলা জানিয়ে দিচ্ছেন যে, তিনি আমাদের সবার পরীক্ষা নিবেন। আর এই পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে তিনি মুমিন ও কৃতজ্ঞ বান্দাদেরকে পাপী ও অকৃতজ্ঞদের থেকে আলাদা করে ফেলবেন। আমরা যদি আল্লাহ তা'আলার দেওয়া এসব পরীক্ষাতে ধৈর্য ধারণ করি, তাঁর ওপর তাওয়াক্কুল তথা অবিচল ভরসা রেখে সামনে এগিয়ে চলি, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করি; তবেই আমরা প্রশান্তি অর্জন করতে সক্ষম হবো। আর যদি আমরা অলসতা করে বসে থাকি, তবে নিশ্চিতভাবে আমরা প্রশান্তি অর্জনে ব্যর্থ হবো।
বি:দ্র: কুরআন থেকে প্রশান্তি লাভ বইটি ফ্রী পিডিএফ download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না!