আরব কণ্যার আর্তনাদ pdf download - এনায়তুল্লাহ আলতামাস, arab konnar artonad pdf justboipdf |
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আরব কণ্যার আর্তনাদ বই রিভিউ এবং pdf
৬৩০ খৃস্টাব্দের ৫ ফেব্রুয়ারি, ৮ হিজরী সনের ১৫ শাওয়াল। রাসূল সা. তায়েফ অবরোধ করলেন। হুনাইন ও আউতাসে তুমুল লড়াই করে তায়েফ পৌঁছে মুসলিম লস্কর। তায়েফ শহরকে অবরোধ করার প্রাক্কালে বেঈমানদের আতঙ্ক আল্লাহর তরবারী নামে খ্যাত খালিদ বিন ওয়ালিদ মারাত্মকভাবে আহত হলেন। খালিদের আঘাত খুবই মারাত্মক। জীবনের আশা নেই। জীবন মৃত্যুর মুখোমুখী খালিদ। বীর বাহাদুর খালিদ শত্রু পক্ষের আঘাতে অশ্বপৃষ্ঠ থেকে পড়ে গিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছেন না। আরও পিডিএফ বই মধ্যে
রাসূলের জীবনে এটি ছিল হক ও বাতিলের মধ্যে একটি যুগান্তকারী লড়াই। আবু বকর, ওমর ও আব্বাস রা.-এর মতো প্রথম সারির সকল সাহাবীই লড়াইয়ে লিপ্ত। রাসূল সা.-এর নেতৃত্বে তায়েফ এলাকার অধিবাসী বনী ছাকিফ ও হাওয়াযিন কবিলার মোকাবেলায় লিপ্ত। তায়েফ অঞ্চলে বনী ছাকিফ ও হাওয়াযিন করিলা যুদ্ধবাজ হিসাবে খ্যাত। মালিক বিন আউফ নামে ত্রিশ বছরের এক যুবক মুসলিম বাহিনীর বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছে। মাত্র ত্রিশ বছর বয়সে এমন কঠিন লড়াইয়ে নেতৃত্বদানের কথা শুনতে অবাক লাগলেও মালিক বিন আউফ এতো অল্প বয়সেই যুদ্ধবাজ কবিলা দু'টির সেনাপতিত্ব করার সর্বময় যোগ্যতার অধিকারী। কবিলা দু'টির মধ্যে মালিক বিন আউফের কোন জুড়ি নেই। মালিক বিন আউফ কবিলা দু'টির জন্য বিস্ময়কর যুদ্ধ প্রতিভা, আশা ভরসা ও সকলের গর্ব। তরুণ মালিক বিন আউফ, তার কৌশল চালে হুনাইন ও আউতাসে মুসলিম বাহিনীকে পরাজয়ে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছিলো। আরও পিডিএফ মধ্যে
হযরত মোহাম্মদ সা.-এর বরকতময় স্পর্শে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ালেন খালিদ। এরপর মারাত্মক আঘাত নিয়েই শেষ অবধি রণাঙ্গনে অবিচল থাকলেন তিনি।
তায়েফ অবরোধ ছিল এ যুদ্ধের শেষ ও চূড়ান্ত মহড়া। হুনাইনে রাসূলে কারীমের নেতৃত্বে সাহাবায়ে কেরাম চরম আঘাত হানলে ছাকিফ ও হাওয়াযিন গোত্র মুসলিম বাহিনীর আক্রমণে পিছু হঠতে বাধ্য হয়। পশ্চাদপসারণ করে কবিলা দু'টি দুর্গসম তায়েফ শহরে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে। পশ্চাদপসারণ করলেও তাদের মনোবল এতোটুকু দুর্বল হয়নি। বরঞ্চ তারা ছিল অপরাজিতের আত্মপ্রশংসায় উৎফুল্ল। আরও পিডিএফ মধ্যে
আরও দেখুন: আরজ আলী সমীপে pdf আরিফ আজাদ
দীর্ঘ আঠারো দিন অবরোধ বহাল রাখা হলো। মুসলমানরা বিপুল উৎসাহে দুর্গপ্রাচীর ডিঙ্গানোর জন্য আক্রমণ করতে গিয়ে শত্রুপক্ষের শরাঘাতে আহত ও নিহত হতে লাগল। অবরোধ শেষে রাসূল সা. শীর্ষস্থানীয় সাহাবী আবু বকর, ওমর ও আব্বাস প্রমুখের সাথে পরামর্শ বৈঠকে বসলেন। নেতৃস্থানীয় সাহাবায়ে কেরাম অবরোধ প্রত্যাহার করে মদিনায় ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু অধিকাংশ সাহাবী ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে প্রবল আগ্রহ প্রকাশ করলেন। অধিকাংশ সাহাবী দুর্গপ্রাচীর ডিঙিয়ে দুর্গ জয় করার জন্য উদগ্রীব ছিলেন। সাহাবায়ে কেরামের প্রবল আগ্রহে রাসূল সা. আর একবার দুর্গপ্রাচীর ডিঙানোর অনুমতি দিলেন। অনুমতি পেয়ে সাহাবায়ে কেরাম দুর্গপ্রাচীরে তীব্র আঘাত হানলেন। কিন্তু দুর্গপ্রাচীরের ওপর থেকে তীরবৃষ্টি নিক্ষেপ করা হলো। এতে বহু সংখ্যক সাহাবী আহত ও নিহত হলেন। তাঁদের পক্ষে আর প্রাচীর ডিঙানো সম্ভব হলো না। বাধ্য হয়ে তাঁদের পিছু হটতে হলো।
Also like: কারাগার থেকে বলছি পিডিএফ মাওলানা মামুনুল হক
অবশেষে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলো। মুসলমানদের অধিকাংশ যোদ্ধাই ছিলেন আহত। তাঁদের হতাহতের সংখ্যাও ছিল প্রচুর। অনেকেই শাহাদত বরণ করেন। আহতদের অনেকেই ছিলেন চলাচলে অক্ষম । পঙ্গু হয়ে পড়েছিলেন বহু সাহাবী। আরও পিডিএফ বই মধ্যে
তাঁবু গোটাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশী সময়ের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তাছাড়া খুব বেশী আহতদের জন্য প্রয়োজন ছিল নিরবচ্ছিন্ন বিশ্রাম। রাসূল সা. আহতদের বিশ্রাম ও চিকিৎসার জন্য দুর্গ এলাকা থেকে তাঁবু গুটিয়ে জি'রানায় পৌঁছে তাঁবু ফেলেন।
মুসলমানরা ব্যর্থ হয়ে প্রত্যাবর্তন করছিলেন। তাঁদের প্রত্যাবর্তন শুধু ব্যর্থতার গ্লানিই বহণ করছিল না, বিপুল সংখ্যক সহযোদ্ধাকে হারানো ও আহত হওয়ার যাতনাও তাদের মধ্যে সৃষ্টি করেছিল প্রচণ্ড মনোকষ্ট। তায়েফ নগরী নিত্যদিনের মতোই অপরিবর্তিত ছিল, অজেয় দুর্গপ্রাচীরে যেন মুসলমানদের ব্যর্থতায় উপহাস করছিল। কিন্তু প্রচণ্ড যাতনা, ব্যর্থতার গ্লানিকে ছাপিয়ে গেল আকস্মিক এক ঘটনা।
যেন অলৌকিক ঘটনার মতোই ঘটে গেল ব্যাপারটি। জি'রানা থেকে মুসলমানরা তখনও তাঁবু গুটিয়ে মদিনার দিকে রওয়ানা হননি, এমন সময় বনী ছাকিফ কবিলার শীর্ষস্থানীয় ক'জন লোক মুসলমানদের শিবিরের দিকে এগিয়ে এলো। তারা শিবিরের কাছে পৌঁছে প্রহরীদের কাছে রাসূলুল্লাহ সা.-এর সাথে সাক্ষাতের অনুমতি চাইলো। তাদেরকে রাসূল সা.-এর কাছে নিয়ে গিয়ে কয়েকজন শক্তিশালী সাহাবী নাঙ্গা তরবারী ও বর্শা নিয়ে সতর্ক প্রহরা দিতে লাগলেন। কারণ প্রবল শত্রু পক্ষের এই লোকগুলোকে কোন অবস্থাতেই মুসলমানরা নিরাপদ ভাবতে পারছিলেন না। কেননা, বেশ কয়েকটি অমুসলিম গোত্র নবীজী সা.-কে হত্যা করার অব্যাহত চক্রান্ত করছিল। হাওয়াযিন গোত্রের জন্য সমূহ বিপদ সৃষ্টি করেছিল মুসলমানদের হাতে বন্দি তাদের কিছু সংখ্যক নারী ও শিশু। দুর্গ অবরোধের আগে এক যুদ্ধে ওদের পরাজয় ঘটে। তাতে কিছু সংখ্যক হাওয়াযিন নারী ও শিশু মুসলমানদের হাতে বন্দি হয়। তখনকার নীতিতে এরা ছিল যুদ্ধ বন্দি। পরাজয় কিংবা বিজয় অথবা সামরিক চুক্তি ছাড়া তাদের পক্ষে মুসলমানদের হাতে বন্দি হওয়া নারী শিশুদের ফিরে পাওয়ার কোন পথ ছিল না। আরও পিডিএফ মধ্যে: মুসলিম ম্যানারস pdf ডাউনলোড
তাহলে তার সকল সম্পদ ফিরিয়ে দেয়া হবে। হাওয়াযিন গোত্রের আগত লোকদের মধ্য থেকে নেতৃস্থানীয় এক লোক বলল “হে মুহাম্মদ! আমাদের কবিলার লোকসহ সবাই আপনাকে আল্লাহর রাসূল হিসাবে মেনে নিয়েছে। আমাদের কবিলার সবাই আপনার ধর্মে দীক্ষা নিয়েছে।”
আল্লাহর কসম! তোমরা কল্যাণ পথ অবলম্বন করেছো। এটাই “সীরাতে মুস্তাকীম” বললেন রাসূল সা.। কবিলার সর্দার বলল, “হে মুহাম্মদ! আপনি তো আল্লাহর রাসূল! আপনি
কি আমাদের নারী শিশু ও সহায়-সম্পদ ফিরিয়ে দেবেন?”
“আমাদের সাথে যুদ্ধ করে এবং আমাদের লোকজনকে হত্যা করে যে সব জিনিস তোমরা হারিয়েছ, সেগুলো ফিরে পাওয়ার কোন অধিকার তোমাদের নেই” বললেন রাসূল সা.। তবে যে একক ও অদ্বিতীয় আল্লাহকে তোমরা মহান প্রভু ও রব হিসাবে মেনে নিয়েছ, তাঁর সম্মানে তোমাদের আমি হতাশ করবো না। তোমাদের কাছে নারী শিশু নাকি সহায়-সম্পদ বেশী প্রিয়?
“আপনি আমাদের নারী ও শিশুকে অন্তত ফিরিয়ে দিন।” কথাটি বললেন প্রতিনিধি দলের নেতা।
রাসূল সা. হাওয়াযিন কবিলার নারী ও শিশুকে মুক্ত করে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন।
হাওয়াযিন গোত্রের নেতাদের কাছে রাসূল সা.-এর এই উদারতা ছিল আশাতীত। রাসূলের এই উদারতায় গোটা হাওয়াযিন গোত্রের লোক ইসলামে দীক্ষা নিলো।
আরব কণ্যার আর্তনাদ pdf পিডিএফ টি ডাউনলোড করতে নিচে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন