রাসূলের চোখে দুনিয়া pdf download, rasuler chokhe duniya pdf download, ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল ( রহিমাহুল্লাহ বই pdf |
একটু পড়ুন:
ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল (রহিমাহুল্লাহ) ১৬৪ হিজরি/ ৭৮০ খৃষ্টাব্দে বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন। অতি অল্প বয়সে তিনি তাঁর পিতাকে হারান। বাগদাদে তিনি আইন, হাদীস ও অভিধানশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করেন। তখন তিনি কিছুদিনের জন্য ইমাম আবূ হানীফা'র প্রধান ছাত্র ও তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ইমাম আবূ ইউসুফের পাঠচক্রে হাজিরা দিয়েছিলেন। তবে বাগদাদে তিনি ছিলেন ইমাম শাফিয়ি'র একান্ত ছাত্ৰ
পরবর্তীতে তিনি হাদীসশাস্ত্রের দিকে পূর্ণ মনোনিবেশ করেন। বিশুদ্ধ হাদীসের সন্ধানে তিনি কৃষ্ণা, বসরা, মক্কা, মদীনা, ইয়েমেন ও শাম, মরক্কো, আলজেরিয়া, পারস্য, খোরাসান, মিডিয়া প্রভৃতি অঞ্চল ভ্রমণ করেন। সুইয়ান ইবনু উয়াইনা, ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ কাত্তান ও ওয়াকি ইবনুল জাররাহ প্রমুখ মুহাদ্দিসের নিকট তিনি হাদীস পাঠ করেন। তাঁর নিকট থেকে হাদীস বর্ণনাকারীদের মধ্যে মুহাম্মাদ ইবনু ইদরীস শাফিয়ি, ইমাম বুখারি, ইমাম মুসলিম ও ইমাম আবূ দাউদ (রহিমাহুমুল্লাহ)-এর নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।
‘কুরআন একটি সৃষ্ট বস্তু’– এ-সংক্রান্ত মতবাদ মেনে না নেওয়ায় সমকালীন শাসকগোষ্ঠী তাকে দু-বছরেরও বেশি সময় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতন সত্ত্বেও তিনি ছিলেন তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়।
জ্ঞান ব্যতীত পার্থিব কোনো বিষয়ে তাঁর কোনো আগ্রহ ছিল না। ইমাম আবু দাউদ সিজিস্তানি (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,
‘আমি দু-শতাধিক বিজ্ঞ মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করেছি; তবে আহমাদ ইবনু হাম্বাল-এর ন্যায় কাউকে দেখিনি। মানুষ সাধারণত পার্থিব যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনায় প্রবৃত্ত হয়, তিনি সেসব বিষয়ের আলোচনায় যোগ দিতেন না। জ্ঞানের কথা আলোচনা হলে তিনি কথা বলতেন।
তিনি শাসকদের উপহার প্রত্যাখ্যান করতেন। বই লিখে যে অর্থ পাওয়া যেতো তা দিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। আবার কখনো কখনো কায়িক শ্রম দিয়ে অর্থ উপার্জন করতেন। তাঁর লিখিত গ্রন্থাবলির মধ্যে রয়েছে: আল-মুসনাদ, আর- রাদ্দু আলায়-যানাদিকাহ, কিতাবুয যুহদ। 'আল-মুসনাদ' নামক হাদীসশাস্ত্রের এ বিশ্বকোষটিতে তিনি প্রায় উনত্রিশ হাজার হাদীস সংকলন করেছেন।
হাদীস চর্চার পাশাপাশি তিনি অজস্র আইনগত প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন, যা তাঁর ছাত্রবৃন্দ সুবিন্যস্ত করে প্রকাশ করেছেন। আর এর ভিত্তিতেই গড়ে উঠেছে ‘হাম্বালি মাযহাব' নামে ইসলামি আইনশাস্ত্রের আরেকটি গ্রহণযোগ্য মাযহাব।
তিনি ২৪১ হিজরি / ৮৫৫ খৃষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। তাঁকে বাগদাদের মাকাবিরুশ শুহাদা (শহীদি কবরস্থান)-এ দাফন করা হয়।
* [১৭৭] আবূ সাঈদ খুদরি (রদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, 'আমি আনসারদের একটি পাঠচক্রে উপস্থিত ছিলাম। পর্যাপ্ত বস্ত্রের অভাবে ] আমাদের কারো কারো দেহের বিভিন্ন অংশ অনাবৃত হয়ে পড়ছিল; ফলে তাঁরা নানাভাবে সেসব অংশ ঢেকে রাখার চেষ্টা করছিলেন। আমাদের একজন পাঠক আমাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাআলার কিতাব পড়ে শোনাচ্ছিলেন, আর আমরা তা মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এসে আমাদের সাথে বসে গেলেন, যেন তিনি আমাদেরই একজন! এ দৃশ্য দেখে পাঠক থেমে গেলেন।
নবি (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কী বিষয়ে কথা বলছিলে?” আমরা জবাব দিলাম, 'হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের মধ্যে একজন পাঠক আমাদেরকে আল্লাহ'র কিতাব পাঠ করে শোনাচ্ছিলেন।' এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাতের ইশারায় তাঁদেরকে গোল হয়ে বসার নির্দেশ দিলেন। সবাই তা করলো। আমি দেখতে পেলাম, রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ পাঠচক্রের মধ্যে আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে চেনেন না। অতঃপর তিনি বললেন,
“নিঃস্বদের দল! সুসংবাদ তোমাদের জন্য। ধনীদের অর্ধদিবস পূর্বে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে; আর সেই অর্ধদিবসটি হল পাঁচশত বছরের সমান।”
* [তুলনীয়: হাদীস নং ৩০; ১২৭; ১৩৩;১৭৮ ]
রাসূলের চোখে দুনিয়া pdf download করতে নিচে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন।