তাফসীর ইবনে কাসীর সকল খণ্ড pdf free download, মূলঃ হাফেজ ইমাদুদ্দিন ইবনু কাসীর (রঃ), অনুবাদঃ ডঃ মুহাম্মদ মুজীবুর রহমান |
তাফসীর ইবনে কাসীর ১ ২ ৩ খণ্ড pdf
ইমাম ইবনু কাসীর (রহঃ) ইতিহাসের পৃষ্ঠায় যে সমস্ত তাক্সীর শাস্ত্রজ্ঞ, মুহাদ্দিস, মুয়াররিখ, ফকীহ, ধর্মীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান, তত্ত্ব ও শাস্ত্রালােচনায় বিপুল পারদর্শিতা ও সর্বতােমুখী প্রতিভার পরিচয় দিয়ে এই মর-জগতের বুকে অমরত্ব লাভ করেছেন এবং যেসব মনীষী পবিত্র কুরআন। হাদীস তথা শাশ্বত সুন্নাহর বিজয় নিকেতন সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয়েছেন, তন্মধ্যে হাফিয ইমাদুদ্দীন ইসমাঈল ইবনু কাসীরের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ্য।
নাম ও বংশ পরিচয়ঃ
তাঁর প্রকৃত নাম ইসামঈল, আবুল ফিদা তাঁর কুনিয়াত বা উপনাম এবং ইমাদুদ্দীন (ধর্মের স্তম্ভ) তাঁর উপাধি। সুতরাং তার শাজরা-ই-নাসাব' বা কুলজীনামাসহ পুরাে নাম ও বংশ পরিচয় হচ্ছে নিম্নরূপঃ
আবুল ফিদা ইমাদুদ্দীন ইসমাঈল ইবনু উমার ইবনু কাসীর ইবনু যাউ ইবনু কাসীর ইবনু যারা, আল-কারশী, আল-বাসারী, আ দিমাশকী।
কিন্তু সাধারণ্যে তিনি ইবনু কাসীর নামেই সমধিক প্রসিদ্ধ। বস্তুতঃ আল-কসরী’ নামক তাঁর এই ‘নিসবাতটি হচ্ছে জন্মস্থান বাচক উপাধি এবং ‘আ দিমাশকী’ নামক তাঁর এই ‘নিসবাত’টি হচ্ছে তাঁর শিক্ষা-দীক্ষা বা তা'লীম ও তারবিয়াত বাচক উপাধি। ১. এই “যারা’ নামের আরবী অক্ষর বা বানানে কিছুটা ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায়।
হাফিয আবুল মাহাসিন তাঁর ' বা পাদটীকায় ১ দিয়ে এবং আল্লামা ইবনুল
ইমাদ তার শারাতুয যাহাব’ গ্রন্থে • দিয়ে লিখেছেন। ২. আলােচ্য শব্দটি নিয়েও কিছুটা মতবিরােধ রয়েছে। হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী
তাঁর ‘দুরারে কামিনাহ' গ্রন্থে এবং আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী তাঁর 'যাইলে তাঁবাকাতিল হুফফায’ গ্রন্থে আল কাইসী' লিখেছেন। কিন্তু হাফিয তাকী উদ্দিন। ইবনু ফাহদ তাঁর ‘লাহাযুল আলহায' গ্রন্থে, নওয়াব সিদ্দীক হাসান ভূপালী তার ‘আবজাদুল উলুম' গ্রন্থে এবং মুহাম্মদ, ইবনু আবদুর রহমান হামযাহ তাঁর মুকাদ্দমায় আলকারশী' উল্লেখ করেছেন। এই শেষােক্ত শব্দটিই শুদ্ধ ও অভ্রন্তি বলে মনে হয়। কারণ যয়নুদ্দীন আবদুর রহমান ও বদরুদ্দীন আবুল বাকা’ মুহাম্মদ নামক ইবনু-কাসীরের (রহঃ) দুই পুত্ররত্নের নামের সঙ্গেও এই কারশী’ শব্দটি অবিচ্ছেদ্যভাবে সংযুক্ত রয়েছে। সুতরাং পিতা ও পুত্রের নিসবাত' যে একই ধরনের হবে এতে আর এমন কী সন্দেহ থাকতে পারে?
ইমাম ইবনু কাসীর
প্রথম খণ্ড ইমাম ইবনু কাসীর ছিলেন এক সুশিক্ষিত, জ্ঞানী ও বিদ্বান পরিবারের সুসন্তান। তাঁর সুযােগ্য পিতা শাইখ আবু হাফস শিহাবুদ্দীন উমার (রহঃ) সে অঞ্চলের খতীব পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তার বড় ভাই শাইখ আবদুল ওয়াহাব (রহঃ) ছিলেন সে যুগের খ্যাতনামা আলেম, হাদীস বেত্তা ও তাফসীরবিদ। এমনকি যয়নুদ্দীন ও বদরুদ্দীন নামক তাঁর পুত্রদ্বয়ও ছিলেন সেকালের বিরাট খ্যাতিসম্পন্ন হাদীস বেত্তা।
জন্ম ও শিক্ষা-দীক্ষাঃ
ইমাম ইবনু কাসীর (রহঃ) সিরীয়া প্রদেশের প্রসিদ্ধ শহর বসরার অন্তর্গত মাদল নামক মতলায় ৪০০ হিজরীতে জনাগহণ করেন।
তাফসীর ইবনে কাসীর - ১ ২ ৩ খণ্ড pdf
{getButton} $text={Download Now} $icon={download}
তাফসীর ইবনে কাসীর ৪, ৫, ৬, ৭, খণ্ড pdf
সূরা আলে ইমরান ৩ পারাঃ ৩
পূর্বেই আয়াতুল কুরসীর তাফসীরের বর্ণনায় এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে যে, ইম-ই-আযম এ আয়াতের মধ্যে ও আয়াতুল কুরসীর মধ্যে রয়েছে। -এর তাফসীর সূরা-ই-বাকারার প্রারম্ভে লিখা হয়েছে। সুতরাং এখানে আর পুনরাবৃত্তির প্রয়ােজন নেই।
৪৭ -এর তাফসীরও আয়াতুল কুরসীর তাফসীরে লিখা হয়েছে।
অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “হে মুহাম্মদ (সঃ)! আল্লাহ তা'আলা তােমার উপর সত্যের সঙ্গে কুরআন মাজীদ অবতীর্ণ করেছেন, যার মধ্যে সন্দেহের লেশমাত্র নেই। বরং নিশ্চয়ই ওটা আল্লাহ পাকের পক্ষ হতে এসেছে, যা তিনি স্বীয় জ্ঞানের সাথে অবতীর্ণ করেছেন। ফেরেশতাগণ এর উপর সাক্ষী রয়েছেন এবং আল্লাহর সাক্ষ্যই যথেষ্ট। কুরআন মাজীদ তার পূর্বের সমস্ত আসমানী কিতাবের সত্যতা স্বীকারকারী এবং ঐ কিতাবগুলাে, এ কুরআন কারীমের সত্যতার উপর দলীল স্বরূপ। কেননা, ঐগুলাের মধ্যে নবী (সঃ)-এর আগমন এবং এ কিতাব অবতীর্ণ হওয়ার যে সংবাদ ছিল তা সত্যরূপে সাব্যস্ত হয়েছে। তিনিই হযরত মূসা ইবনে ইমরান (আঃ)-এর উপর তাওরাত এবং হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ)-এর উপর ইঞ্জীল অবতীর্ণ করেছিলেন। এ দু'টোও সে যুগীয় লােকদের জন্যে পথপ্রদর্শক ছিল। | তিনি ফুরকান অবতীর্ণ করেছেন যা সত্য ও মিথ্যা, সুপথ ও ভ্রান্ত পথের মধ্যে পার্থক্য আনয়নকারী। ওর স্পষ্ট ও উজ্জ্বল দলীলগুলাে প্রত্যেকের জন্যে যথেষ্ট হয়ে থাকে। হযরত কাতাদাহ্ (রঃ) এবং হযরত রাবী’ ইবনে আনাস (রঃ) বর্ণনা করেন যে, এখানে ফুরকানের ভাবার্থ হচ্ছে কুরআন। যদিও এটা
কিন্তু এর পূর্বে কুরআনের বর্ণনা হয়েছে বলে এখানে বলেছেন। হযরত আবু সালিহ (রঃ) হতে এও বর্ণিত আছে যে, ফুরকানের ভাবার্থ হচ্ছে ‘তাওরাত’, কিন্তু এটা দুর্বল। কেননা, তাওরাতের বর্ণনা এর পূর্বে হয়েছে। কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসকারী এবং বাতিলপন্থীদের কঠিন শাস্তি হবে। আল্লাহ তা'আলা মহা পরাক্রমশালী ও বিরাট সাম্রাজ্যের অধিকারী। যারা মহা সম্মানিত নবী ও রাসূলদের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং আল্লাহর আয়াত সমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, আল্লাহ তা'আলা পূর্ণভাবে তাদের প্রতিশােধ গ্রহণকারী।
সূরা আলে ইমরান ৩
| পারাঃ ৩ ৫। নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট
ভূমন্ডল ও নভােমন্ডলের কোন বিষয়ই লুকায়িত নেই। 35, ৬। তিনিই স্বীয় ইচ্ছানুযায়ী জরায়ুর ।
মধ্যে তােমাদের আকৃতি গঠন ” করেছেন। তিনি ব্যতীত ব্যতীত কোনই উপাস্য নেই, তিনি পরাক্রমশালী, বিজ্ঞানময়।
আল্লাহ তা'আলা সংবাদ দিচ্ছেন যে, আকাশ ও পৃথিবীর কোন বস্তুই তাঁর নিকট লুক্কায়িত নেই, বরং সব কিছুরই তিনি পূর্ণ জ্ঞান রাখেন। তিনি বলেন-“আল্লাহ পাক তােমাদেরকে তােমাদের মায়ের জরায়ুর মধ্যে আকৃতি বিশিষ্ট করেছেন। তিনি যেভাবেই আকৃতি গঠনের ইচ্ছে করেছেন তাই করেছেন। তিনি ছাড়া অন্য কেউ ইবাদতের যােগ্য নেই। তিনি মহা পরাক্রমশালী ও বিজ্ঞানময়। একমাত্র তিনিই যখন তােমাদের আকৃতি গঠন...
তাফসীর ইবনে কাসীর - ৪, ৫, ৬, ৭ খণ্ড pdf
সূরাঃ আন'আম ৬
একটি নির্দিষ্ট মেয়াদও তাঁর নিকট নির্ধারিত রয়েছে, কিন্তু I ১. এর পরেও তােমরা সন্দেহ করে
১০ থাক। ৩। আকাশসমূহে ও পৃথিবীতে ঐ
এক আল্লাহই রয়েছেন, ২-৩ ;-r তােমাদের অপ্রকাশ্য ও প্রকাশ্য 2 ও :/৮?? / সব অবস্থাই তিনি জানেন আর তােমরা ভাল মন্দ যা কিছু কর সেটাও তিনি পূর্ণরূপে। অবগত আছেন। এখানে মহান আল্লাহ তার পবিত্র সত্তার প্রশংসা করছেন যে, তিনিই আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। যেন তিনি স্বীয় বান্দাদেরকে প্রশংসা করার কথা শিক্ষা দিচ্ছেন। তিনি দিনে আলােককে এবং রাত্রে অন্ধকারকে তাঁর বান্দাদের জন্যে একটা উপকারী বস্তু বলে ঘােষণা দিচ্ছেন।
এখানে শব্দটিকে একবচন এবং Cট শব্দটিকে বহুবচনরূপে ব্যবহার করা হয়েছে। কেননা, উৎকৃষ্ট জিনিসকে একবচন রূপেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন আল্লাহ তা'আলার উক্তি রয়েছেঃ , এবং
এখানেশব্দকে একবচন এবং ও শব্দকে বহুবচন আনা হয়েছে। আর নিজের রাস্তাকে বলে একবচন এনেছেন এবং ভুল রাস্তাগুলােকে ? বলে বহুবচন এনেছেন। মােটকথা, যদিও আল্লাহর কতকগুলাে বান্দা কুফরীতে লিপ্ত হয়ে তার শরীক স্থাপন করেছে এবং তার স্ত্রী ও সন্তান সাব্যস্ত করেছে (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক),তথাপি তিনি এ সবকিছু হতে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র।
তিনি সেই প্রভু যিনি তােমাদেরকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন অর্থাৎ তােমাদের পিতা হযরত আদম (আঃ)-কে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং মাটিই তাঁর গােশত ও চামড়ার আকার ধারণ করেছিল। অতঃপর তারই মাধ্যমে মানবকে সৃষ্টি করে পূর্ব ও পশ্চিমে ছড়িয়ে দেয়া হয়। তারপর হযরত আদম (আঃ) পূর্ণ শক্তি প্রাপ্ত হন এবং তাঁর মৃত্যুর নির্ধারিত সময়ে পৌছে যান। হযরত হাসান (রঃ)-এর মতে প্রথম ৮ শব্দ দ্বারা মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের
সূরাঃ আন'আম ৬
পারাঃ ৭
সময় বুঝানাে হয়েছে। আর দ্বিতীয় ১৮ শব্দ দ্বারা মৃত্যুর পরে পুনর্জীবন পর্যন্ত সময়কে বুঝানাে হয়েছে। তা হচ্ছে মানুষের চলন্ত বয়স এবং ৫ ] হচ্ছে সারা দুনিয়ার বয়স অর্থাৎ দুনিয়া লয়প্রাপ্ত হওয়া থেকে নিয়ে দারে আখিরাতের সময় আসা পর্যন্ত। | হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এবং হযরত মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, প্রথম ৫ দ্বারা দুনিয়ার সময়কাল এবং ১৮ দ্বারা মানুষের জীবন হতে মৃত্যু পর্যন্ত সময়কে বুঝানাে হয়েছে। এটা যেন আল্লাহ তা'আলার নিম্নের উক্তি হতেই গ্রহণ করা হয়েছে।
অর্থাৎ “তিনি রাত্রিকালে তােমাদেরকে মেরে ফেলেন। এবং দিবা ভাগে তােমরা যা কিছু কর তা তিনি সম্যক অবগত। আর রাত্রিকালে তাে তােমরা কিছুই করতে পার না।” (৬ঃ ৬০) অর্থাৎ তােমরা সে সময় নিদ্রিত অবস্থায় থাক এবং সেটা হচ্ছে আত্মা বেরিয়ে যাওয়ার রূপ।
তাফসীর ইবনে কাসীর - ৮ থেকে ৯ - ১০ - ১১ খণ্ড pdf
{getButton} $text={Download Now} $icon={download}
সূরাঃ হূদ ১১
তাফসীর ইবনে কাসীর - ১২ খণ্ড pdf
পারাঃ ১২ | আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন যে, প্রত্যেক জিনিষেরই উপর তাঁর ক্ষমতা রয়েছে, আসমানসমূহ ও যমীনকে তিনি ছ’দিনে সৃষ্টি করেছেন এবং এর পূর্বে তাঁর আশ পানির উপর ছিল। যেমন হযরত ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “হে বানু তামীম (গােত্র)! তােমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর।” তারা বললােঃ “আপনি আমাদের সুসংবাদ তাে প্রদান করলেন, সুতরাং আমাদেরকে তা দিয়ে দিন” তিনি (পুনরায়) বললেনঃ “হে ইয়ামনবাসী! তােমরা শুভ সংবাদ গ্রহণ কর।” তারা বললােঃ “আমরা গ্রহণ করলাম। সুতরাং সৃষ্টির সূচনা কি ভাবে হয়েছে তা আমাদেরকে শুনিয়ে দিন!” তিনি বললেনঃ “সর্ব প্রথম আল্লাহই ছিলেন এবং তার আশ ছিল পানির উপর।
তিনি লাওহে মাহফুযে সব জিনিষের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেন।” হাদীসের বর্ণনাকারী ইমরান (রাঃ) বলেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সঃ) এ পর্যন্ত বলেছেন এমন সময় আমার কাছে এক আগন্তুক এসে বলেঃ “হে ইমরান (রাঃ)! আপনার উক্ট্রিটি দড়ি ছিড়ে পালিয়ে গেছে। আমি তখন ওর খোঁজে বেরিয়ে পড়ি। সুতরাং আমার চলে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সঃ) কি বলেছিলেন তা আমার জানা নেই।” এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীদ মুসলিমেও ছিল
আর একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, তাঁর সাথে কিছুই ছিল না এবং তাঁর আরশটি পানির উপর ছিল। হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তাআলা আসমান ও যমীন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে সমস্ত সৃষ্ট জীবের ভাগ্য লিখে রাখেন এবং তার আশটি পানির উপর ছিল।”
এ হাদীসের তাফসীরে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তাআলা বলেনঃ (হে বান্দা)! তুমি (আমার পথে) খরচ কর, আমি তােমাকে তার প্রতিদান প্রদান করবাে।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেনঃ “আল্লাহর হাত পরিপূর্ণ রয়েছে। রাত দিনের খরচ তার কিছুই কমাতে পারে না। তােমরা কি দেখ না যে, আসমান যমীনের সৃষ্টি থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত কি পরিমাণ খরচ করে আসছেন? অথচ তাঁর ১. এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ) বর্ণনা করেছেন। ২. এ হাদীসটি সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে।
সূরাঃ হূদ ১১
পারাঃ ১২ দক্ষিণ হস্তে যা ছিল তার এতটুকুও কমে নাই। তাঁর আরুশটি ছিল পানির উপর তাঁর হাতে মীযান (দাড়িপাল্লা) রয়েছে যা তিনি কখনাে উঁচু করছেন এবং কখনাে নীচু করছেন।
তাফসীর ইবনে কাসীর - ১২ খণ্ড pdf
{getButton} $text={Download Now} $icon={download}
সূরাঃ ইবরাহীম ১৪
তাফসীর ইবনে কাসীর - ১৩ খণ্ড pdf
পারাঃ ১৩ ‘হুরূফে মুকাত্তাআ’হ’ যা সূরাসমূহের শুরুতে এসে থাকে ওগুলির বর্ণনা পূর্বেই গত হয়েছে। সুতরাং এখানে পুনরাবৃত্তি নিষ্প্রয়ােজন। এরপর আল্লাহ তাআ’লা স্বীয় নবীকে (সঃ) সম্বােধন করে বলছেনঃ হে নবী (সঃ)! এই ব্যাপক মর্যাদা সম্পন্ন কিতাবটি আমি তােমার উপর অবতীর্ণ করেছি। এই কিতাবটি অন্যান্য সমূদয় আসমানী কিতাব হতে বেশী উন্নত মানের এবং রাসূল (সঃ) অন্যান্য সমস্ত রাসূল হতে শ্রেষ্ঠ। যে জায়গায় এই কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে সেই জায়গাটিও দুনিয়ার সমস্ত জায়গা হতে উত্তম-এর প্রথম গুণ এই যে, তুমি এর মাধ্যমে জনগণকে অজ্ঞতার অন্ধকার হতে জ্ঞানের আলােকের দিকে নিয়ে আসবে।
তােমার প্রথম কাজ এই যে, তুমি পথ ভ্রষ্টতাকে হিদায়াত এবং মন্দকে ভালাের দ্বারা পরিবর্তন ঘটাবে। স্বয়ং আল্লাহ তাআলাই হচ্ছেন মুমিনদের সহায়ক। তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলােকের দিকে নিয়ে আসেন। আর কাফিরদের সঙ্গী হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ, যা তাদেরকে আলাে থেকে সরিয়ে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। প্রকৃত হিদায়াতকারী আল্লাহ তাআ'লাই। রাসূলদের মাধ্যমে যাদের হিদায়াতের তিনি ইচ্ছা করেন তারাই সুপথ প্রাপ্ত হয়ে থাকে এবং তারাই অপরাজেয়, বিজয়ী এবং সব কিছুর বাদশাহ বনে যায় এবং সর্বাবস্থায় প্রশংসিত আল্লাহর পথের দিকে পরিচালিত হয়। aji শব্দটির অন্য কিরআত ii ও রয়েছে। প্রথমটি এ হিসেবে এবং দ্বিতীয়টি নতুন বাক্য হিসেবে। যেমন আল্লাহ তাআলার উক্তিঃ
قل يايها الناس انی رسول الله إليكم جميع الذى ته ملك الموت
والأرض
অর্থাৎ “(হে নবী, সঃ) তুমি বলঃ হে লােক সকল! নিশ্চয় আমি তােমাদের সকলের নিকট সেই আল্লাহর রাসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছি যার জন্যে রয়েছে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর রাজত্ব।” (৭ঃ ১৫৮)।
আল্লাহপাক বলেনঃ কঠিন শাস্তির দুর্ভোগ কাফিরদের জন্যে। কিয়ামতের দিন তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ভােগ করতে হবে। তারা পার্থিব জীবনকে পারলৌকিক জীবনের উপর প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তারা দুনিয়া লাভের জন্যে পুরাে মাত্রায় চেষ্টা-তদবীর করে এবং আখেরাত হতে থাকে সম্পূর্ণরূপে
সূরাঃ ইবরাহীম ১৪ পারাঃ ১৩
উদাসীন। তারা রাসূলদের আনুগত্য হতে অন্যদেরকেও বিরত রাখে। আল্লাহর পথ হচ্ছে সােজা ও পরিষ্কার, তারা সেই পথকে বক্র করতে চায়। তারাই অজ্ঞতা ও ঘাের বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু আল্লাহর পথ বক্র হয়ও নি এবং হবেও না। সুতরাং এ অবস্থায় তাদের সংশােধন সুদূর পরাহত।
তাফসীর ইবনে কাসীর - ১৩ খণ্ড pdf
{getButton} $text={Download Now} $icon={download}
সূরাঃ কাহফ ১৮ পারাঃ ১৫
ত, ১২ রুকূ')
সূরার ফজীলত বিশেষ করে প্রথম দশটি আয়াতের ফজীলতের বর্ণনা এবং সূরাটি যে দাজ্জালের ফিত্না হতে রক্ষাকারী তার বর্ণনা।
মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, একজন সাহাবী এই সূরাটি পাঠ করতে শুরু করেন। তাঁর বাড়ীতে একটি জন্তু ছিল, সে লাফাতে শুরু করে। সাহাবী গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করে সামিয়ানার মত এক খণ্ড মেঘ দেখতে পান যা তার উপর ছায়া করে রয়েছে। তিনি এটা রাসূলুল্লাহর (সঃ) কাছে বর্ণনা করেন।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেনঃ “তুমি এটা পাঠ করতে থাকো। এটা হচ্ছে আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে ঐ ‘সাকীনা’ যা কুরআন পাঠের সময় অবতীর্ণ হয়ে থাকে। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমেও এই রিওয়াইয়াতটি রয়েছে। এই সাহাবী ছিলেন হযরত উসায়েদ ইবনু হুযায়ের (রাঃ), যেমন সূরায়ে বাকারার তাফসীরে আমরা বর্ণনা করেছি।
মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি সূরায়ে কাহফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ, করে তাকে দাজ্জালের ফিৎনা হতে রক্ষা করা হয়; জামে তিরমিযীতে তিনটি আয়াতের বর্ণনা রয়েছে। সহীহ মুসলিমে শেষ দশটি আয়াতের বর্ণনা আছে। সুনানে নাসায়ীতে সাধারণভাবে দশটি আয়াতের বর্ণনা রয়েছে। | মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি সূরায়ে কাহফের প্রথম ও শেষ। আয়াত পাঠ করে, তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত নূর হবে। আর যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সূরাটি পড়বে সে যমীন হতে আসমান পর্যন্ত নূর লাভ করবে।
একটি গারীব বা দুর্বল সনদে ইবনু মীরদুওয়াই (রঃ) বর্ণনা করেছেন যে, জুমআর দিন যে ব্যক্তি সূরায়ে কাহফ পাঠ করবে সে তার পায়ের নীচ থেকে নিয়ে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর লাভ করবে। ওটা কিয়ামতের দিন খুবই উজ্জ্বল হবে এবং পরবর্তী জুমআ পর্যন্ত তার সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। এই হাদীসের মার’ হওয়ার ব্যাপারে চিন্তা ভাবনার অবকাশ রয়েছে। এর মাওকূফ হওয়াটাই সঠিক কথা।
সূরাঃ কাহ্ফ ১৮
পারাঃ ১৫ হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরায়ে কাহফ পাঠ করে তার পার্শ্ব থেকে নিয়ে বায়তুল্লাহ পর্যন্ত আলােকিত হয়ে যায়।
মুসতাদরিকে হাকিমে মারফু রূপে বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরায়ে কাহফ পড়ে তার জন্যে দুই জুমআ'র মধ্যবর্তী সময় আলােকিত হয়ে থাকে। ইমাম বায়হাকীর (রঃ) হাদীস গ্রন্থে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি সূরায়ে কাহ্ফকে.... আরো বিস্তারিত পড়তে pdf টি ডাউনলোড করুন...
তাফসীর ইবনে কাসীর - ১৪ খণ্ড pdf
{getButton} $text={Download Now} $icon={download}
সূরাঃ মু'মিনূন ২৩
তাফসীর ইবনে কাসীর - ১৫ - খণ্ড pdf
হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর যখন অহী অবতীর্ণ হতাে তখন তার মুখের কাছে মৌমাছির গুগুন্ শব্দের মত শব্দ শােনা যেতাে। একদা তার উপর এ অবস্থাই ঘটে। অল্পক্ষণ পরে যখন অহী অবতীর্ণ হওয়ার কাজ শেষ হয় তখন তিনি কিবলামুখী হয়ে স্বীয় হস্তদ্বয় উত্তোলন করতঃ নিম্নের দু'আটি পাঠ করেনঃ ।
অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আমাদেরকে বেশী করে দিন, কম করবেন না। আমাদেরকে সম্মানিত করুন, লাঞ্ছিত করবেন না। আমাদেরকে প্রদান করুন, বঞ্চিত করবেন না। অন্যদের উপর আমাদেরকে পছন্দ করে নিন, আমাদের উপর অন্যদেরকে পছন্দ করবেন না। আমাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে যান এবং আমাদেরকে সন্তুষ্ট করুন। তারপর তিনি 3 33 5 হতে দশটি আয়াত পর্যন্ত পাঠ করেন।
হযরত ইয়াযীদ ইবনে বাবনুস (রঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমরা উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলামঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর চরিত্র কেমন ছিল? উত্তরে তিনি বলেনঃ “কুরআনই ছিল রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর চরিত্র।” অতঃপর তিনি বলেন, কোরআন এই আয়াত পর্যন্ত পাঠ করেন। তারপর বলেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর চরিত্র এরূপই ছিল।
হযরত কা'ব আল আহবার (রাঃ), হযরত মুজাহিদ (রঃ), হযরত আবুল আলিয়া (রঃ) প্রমুখ গুরুজন হতে বর্ণিত আছে যে, যখন আল্লাহ তাআলা জান্নাতে আদন সৃষ্টি করেন এবং ওর মধ্যে (গাছপালা ইত্যাদি) স্বহস্তে রােপণ ১. এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ), ইমাম তিরমিযী (রঃ) এবং ইমাম নাসাঈ (রঃ) বর্ণনা
করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে মুনকার বলেছেন। কেননা এর বর্ণনাকারী শুধু | ইউনুস ইবনে সুলায়েম রয়েছেন, যিনি মুহাদ্দিসদের নিকট পরিচিত নন। ২. এটা নাসাঈ (রঃ) বর্ণনা করেছেন।
সূরাঃ মু'মিনূন ২৩
পারাঃ ১৮ করেন তখন ওগুলাের প্রতি দৃষ্টিপাত করে ওকে বলেনঃ “কিছু কথা বলাে।” ঐ জান্নাতে আদন তখন
এই আয়াতগুলাে পাঠ করে। যেগুলাে আল্লাহ তা'আলা কুরআন কারীমে অবতীর্ণ করেন।
হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন যে, আল্লাহ জান্নাত সৃষ্টি করেন যার এক ইট সােনার ও এক ইট রূপার তৈরী। তাতে তিনি গাছ রােপণ করেন। অতঃপর তিনি জান্নাতকে বলেনঃ “কথা বলাে।” জান্নাত তখন ১ il (6) বলে। তাতে ফেরেশতারা প্রবেশ করে বলেনঃ “বাঃ! বাঃ! এটা তাে বাদশাহদের জায়গা।” অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, ওর গারা ছিল মৃগনাভির। আর একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, তাতে এমন এমন জিনিস রয়েছে যা কোন চক্ষু দেখেনি এবং কোন অন্তর কল্পনা করেনি।
তাফসীর ইবনে কাসীর - ১৫ খণ্ড pdf
{getButton} $text={Download Now} $icon={download}
সূরাঃ সাবা ৩৪ পেইজ ১৪
তাফসীর ইবনে কাসীর - ১৬ - খণ্ড pdf
পারাঃ ২২ কাফির ও বিপথগামী, যারা কিয়ামত সংঘটিত হওয়াকে অস্বীকার করে এবং এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে উপহাস করে, এখানে তাদেরই খবর আল্লাহ তাআলা দিচ্ছেন। তারা পরস্পর বলাবলি করতােঃ দেখাে, আমাদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি রয়েছে যে বলে যে, যখন আমরা মরে মাটির সাথে মিশে যাবাে ও চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবাে, তার পরেও নাকি আমরা আবার জীবিত হয়ে উঠবাে! এ লােকটা সম্পর্কে দুটো কথা বলা যায়। হয়তাে সে আল্লাহর উপর মিথ্যা আরােপ করছে, না হয় সে উন্মাদ।
আল্লাহ তাআলা তাদের এ কথার জবাবে বলেনঃ না, এ কথা নয়। বরং মুহাম্মাদ (সঃ) সত্যবাদী, সৎ, সুপথ প্রাপ্ত ও জ্ঞানী। সে যাহেরী ও বাতেনী জ্ঞানে পরিপক্ক। সে বড়ই দূরদর্শী। কিন্তু এর কি ওষুধ আছে যে কাফিররা মূখতা এবং অজ্ঞতামূলক কাজ-কাম করতে রয়েছে? তারা চিন্তা-ভাবনা করে কোন কাজের গভীরতায় পৌঁছবার কোন চেষ্টাই করে না। তারা শুধু অস্বীকার করতেই জানে। তারা যে কোন কথায় যেখানে সেখানে শুধু অস্বীকার করেই থাকে। কেননা, সত্য কথা ও সঠিক পথ তারা ভুলে যায়। সেখান থেকে তারা বহু দূরে ছিটকে পড়ে।
এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তারা কি তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে, আসমানে ও যমীনে যা আছে তার প্রতি লক্ষ্য করে না? তিনি এতাে ক্ষমতাবান যে, এতে আকাশ ও এমন বিস্তৃত যমীন সৃষ্টি করেছেন! না আকাশ ভেঙ্গে পড়ছে, যমীন ধ্বসে যাচ্ছে! যেমন তিনি বলেনঃ।
অর্থাৎ “আমি আকাশকে স্বহস্তে সৃষ্টি করেছি এবং আমি প্রশস্ততার অধিকারী। আর আমি যমীনকে বিছিয়ে দিয়েছি এবং আমি বিছিয়ে দেয়ার ব্যাপারে কতই না উত্তম!”(৫১ ঃ ৪৭-৪৮) তাদের উচিত সামনে ও পিছনে এবং আকাশ ও পৃথিবীর প্রতি লক্ষ্য করা। এগুলাের প্রতি লক্ষ্য করলেই তারা অনুধাবন করতে পারবে যে, যিনি এত বড় সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা এবং ব্যাপক ও অসীম শক্তির অধিকারী, তিনি কি মানুষের ন্যায় ক্ষুদ্র সৃষ্টিকে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখেন না? তিনি তাে ইচ্ছা করলে তাদেরকেসহ ভূমি ধ্বসিয়ে দিতে পারেন অথবা তাদের উপর আকাশ খণ্ডের পতন ঘটিয়ে দিতে পারেন! এরূপ অবাধ্য বান্দা কিন্তু এরূপ শাস্তিরই যােগ্য।
কিন্তু ক্ষমা করে দেয়া আল্লাহর অভ্যাস। তিনি মানুষকে অবকাশ দিচ্ছেন মাত্র। যার জ্ঞান-বুদ্ধি আছে, দূরদর্শিতা আছে, আছে। চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষমতা, যার মধ্যে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার যােগ্যতা আছে, যার অন্তর আছে এবং অন্তরে জ্যোতি আছে, সে এসব বিরাট বিরাট নিদর্শন দেখার পর মহাশক্তির অধিকারী ও সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর এ
সূরাঃ সাবা ৩৪
পারাঃ ২২ সৃষ্টিতে সন্দেহ পােষণ করতেই পারে না যে, মৃত্যুর পর মানুষ পুনরুজ্জীবিত হবে। আকাশের ন্যায় সামিয়ানা এবং পৃথিবীর ন্যায় বিছানা যিনি সৃষ্টি করেছেন তার জন্যে মানুষকে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করা তাে মােটেই কঠিন কাজ নয়! যিনি প্রথমবার হাড়-গােশত সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন, সেগুলাে সড়ে পড়ে টুকরাে টুকরাে হয়ে যাবার পর আবার ঐগুলােকে পুনর্বার সৃষ্টি করতে কেন তিনি সক্ষম হবেন না? যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেছেনঃ
অর্থাৎ “যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তিনি কি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করতে সমর্থ নন? হ্যা, নিশ্চয়ই (তিনি সক্ষম)। (৩৬ ৮১) আর একটি আয়াতে আছেঃ
তাফসীর ইবনে কাসীর - ১৬ খণ্ড pdf
{getButton} $text={Download Now} $icon={download}
তাফসীর ইবনে কাসীর ১৭ ও ২৮ খণ্ড pdf
এই আয়াতসমূহে আল্লাহ তা'আলা স্বীয় মুমিন বান্দাদেরকে তাঁর নবী (সঃ)-এর ব্যাপারে আদব শিক্ষা দিচ্ছেন যে, নবী (সঃ)-এর মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রাখা তাদের একান্ত কর্তব্য। সমস্ত কাজ-কর্মে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল
সূরা হুজুরাত ৪৯
Pdf Page: ১০
পারাঃ ২৬
(সঃ)-এর পিছনে থাকা তাদের উচিত। তাদের উচিত আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সঃ)-এর আনুগত্য করা। | রাসূলুল্লাহ (সঃ) যখন হযরত মু'আয (রাঃ)-কে ইয়ামনে প্রেরণ করেন তখন তাঁকে প্রশ্ন করেনঃ “তুমি কিসের মাধ্যমে ফায়সালা করবে?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “আল্লাহর কিতাবের মাধ্যমে। আবার তিনি প্রশ্ন করেনঃ “যদি আল্লাহর কিতাবে
পাও?" জবাবে তিনি বলেনঃ “তাহলে সুন্নাতে রাসূল (সঃ)-এর মাধ্যমে ফায়সালা করবাে।” পুনরায় তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ “যদি তাতেও না পাও?” তিনি উত্তর দিলেনঃ “তাহলে আমি চিন্তা-গবেষণা করবাে এবং ওরই মাধ্যমে ফায়সালা করবাে।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তার বুকে হাত মেরে বললেনঃ “আল্লাহর জন্যেই সমস্ত প্রশংসা যিনি তাঁর রাসূল (সঃ)-এর দূতকে এমন বিষয়ের তাওফীক দিয়েছেন যাতে তাঁর রাসূল (সঃ) সন্তুষ্ট। এখানে এ হাদীসটি আনয়নের উদ্দেশ্য আমাদের এই যে, হযরত মুআয (রাঃ) স্বীয় ইজতিহাদকে কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতে রাসূলিল্লাহ (সঃ)-এর পরে স্থান দিয়েছেন। সুতরাং স্বীয় মতকে কিতাব ও সুন্নাতের আগে স্থান দেয়াই হলাে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর আগে বেড়ে যাওয়া।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, একথার ভাবার্থ হচ্ছেঃ “কিতাব ও সুন্নাতের বিপরীত কথা তােমরা বলাে না। হযরত আওফী (রঃ) বলেন যে, এর অর্থ হলােঃ রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কথার উপর কথা বলাে না।' হযরত মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হলােঃ ‘কোন বিষয় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সঃ) যে পর্যন্ত কোন কিছু না বলেন সেই পর্যন্ত তােমরাও কিছুই বলাে না, বরং নীরবতা অবলম্বন করাে।' হযরত যহ্হাক (রঃ) বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছেঃ ‘আমরে দ্বীন ও আহকামে শরয়ীর ব্যাপারে তােমরা আল্লাহর কালাম ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর হাদীস ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা ফায়সালা করাে না।' হযরত সুফিয়ান সাওরী (রঃ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হলােঃ “তােমরা কোন কথায় ও কাজে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর অগ্রণী হয়াে না।' হযরত হাসান বসরী (রঃ) বলেন যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলােঃ “তােমরা ইমামের পূর্বে দু'আ করাে না।'
এরপর আল্লাহ পাক বলেনঃ “তােমরা আল্লাহকে ভয় কর’ অর্থাৎ আল্লাহর হুকুম প্রতিপালনের ব্যাপারে মনে আল্লাহর ভয় রাখাে। ১. এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ), ইমাম আবু দাউদ (রঃ), ইমাম তিরমিযী (রঃ) এবং
ইমাম ইবনে মাজাহ (রঃ) বর্ণনা করেছেন।
সূরাঃ হুজুরাত ৪৯
পারাঃ ২৬
আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ, অর্থাৎ আল্লাহ তােমাদের কথা শুনে থাকেন এবং তােমাদের ইচ্ছা ও উদ্দেশ্যের খবর তিনি রাখেন।
এরপর আল্লাহ তা'আলা তাঁর মুমিন বান্দাদেরকে আর একটি আদব বা ভদ্রতা শিক্ষা দিচ্ছেন যে, তারা যেন নবী (সঃ)-এর কণ্ঠস্বরের উপর নিজেদের কণ্ঠস্বর উঁচু না করে। এ আয়াতটি হযরত আবু বকর (রাঃ) ও হযরত উমার (রাঃ)-এর ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়।
তাফসীর ইবনে কাসীর ১৭ খণ্ড pdf
{getButton} $text={Download Now} $icon={download}
তাফসীর ইবনে কাসীর ১৮ খণ্ড pdf
{getProduct} $button={ Download Now} $price={Free} $free={yes} $icon={download} $style={2}