আমরা কি উদযাপন করব pdf Download, বই ড. আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া pdf Download |
একটু পড়ুন:
জন্মদিন পালনে ইসলামের বিধান
এতক্ষণ যে আলোচনা হলো তার মাধ্যমে এটাই জোর পেল যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও উত্তম যুগের মানুষদের আদর্শ অনুসরণ করার মধ্যেই যাবতীয় কল্যাণ। যে ব্যক্তি আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য এমন ইবাদত করে যার প্রচলন ঐ বরকতময় যুগে ছিল না তার ইবাদত প্রত্যাখ্যাত হয়ে তার দিকেই ফিরে আসবে এবং ঐ কাজের গুনাহ-পাপ সব তাকেই বহন করতে হবে যদিও সে এটি নিষ্ঠার সাথে করে এবং এতে সবচেয়ে বেশি শ্রম ও শক্তি ব্যয় করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিন উদযাপনে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো কি লক্ষ্য করেছেন:-
১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তার সত্যপথগামী খলীফাগণ এবং অন্যান্য কোনো সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম, উত্তম যুগে ইহসানের সাথে তাদেরকে অনুসরণকারী (তাবে'ঈ)দের কেউ এটি পালন করতেন না। অথচ পরবর্তীদের থেকে তারা সুন্নত সম্পর্কে বেশি জানেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি তাদের ভালোবাসা পরিপূর্ণ এবং তাঁর শরীয়ত অনুসরণ সম্পূর্ণরূপে তারাই করেন। যদি এটি ভালোই হত তাহলে তারাই তো আমাদের আগে করতেন।
সাত যুবকের গল্প pdf ডাউনলোড {alertSuccess}
২. আপনি নিশ্চয় জেনেছেন যে, হিজরীর চতুর্থ শতকে সর্বপ্রথম এর উপর আমল করেছে দুরাচার ফাতেমী সম্প্রদায়।
৩. এটির মাধ্যমে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য হয়ে যায় কেননা তারা মসীহ ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মদিন উদযাপন করে। অথচ তাদের সদৃশ হতে এবং বিভিন্ন উৎসবে তাদের অনুসরণ করতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।
৪. মিলাদুন্নবীর মত এ রকম অন্যান্য জন্মদিন পালন করার অর্থ হচ্ছে, এটা মনে করা যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা এই উম্মতের জন্য দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেন নি, রাসূলুল্লাহ আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম উম্মতের যা করা উচিত তা সম্পূর্ণ পৌঁছিয়ে দেন নি আর উত্তম যুগের মানুষেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যথাযথ সম্মান, মহব্বত ও মর্যাদা দেন নি যেরূপ দিয়েছে পরবর্তী যুগের মানুষেরা। আর এই ধরণের কথা দুরাচার দ্বীনভ্রষ্ট ছাড়া কেউ বলতে পারে না। অথচ রাসূলুল্লাহ আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেন,
ما بعث اللهُ مِنْ نَيَّ إِلَّا كَانَ حَقًّا عَلَيْهِ أَنْ يَدُلُّ أُمَّتَهُ عَلَى خَيْرٍ مَا يَعْلَمُهُ لَهُمْ
“আল্লাহ যে নবীকেই প্রেরণ করেছেন তার উপরই আবশ্যক হয়ে গেছে যে, সে তার উম্মতের ভালোর জন্য যা জানে তা সে তাদেরকে জানিয়ে দিবে।” [সহীহ মুসলিম]
আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন নবীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বশেষ ও সবচেয়ে উত্তম অবহিতকারী ও কল্যাণকামী। যদি মিলাদুন্নবী পালন করা দ্বীনের অংশই হত তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বর্ণনা করতেন অথবা নিজের জীবনে করতেন অথবা তার সাহাবীরা (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) অন্তত তা করত।
কোনো ব্যক্তি এটা বলতে পারবে না যে, রাসূল আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম সেটা বিনয়ের কারণে করেন নি কেননা তা (বলা) রাসূল আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের অবমাননার শামিল।
কেননা এর দ্বারা প্রতীয়মান হয়, উম্মতের কল্যাণ রয়েছে এমন বিষয় তিনি গোপন রেখেছেন অথবা খাটো করে দেখেছেন; বস্তুত তিনি এর থেকে মুক্ত, তার জন্য আমার মাতা-পিতা উৎসর্গ হোন। আর এর দ্বারা সাহাবীগণ- যাদেরকে তাদের রব আল্লাহ নিজেই পরিশুদ্ধ করেছেন- তাদেরকেও অবমাননা করা হয়, যে তারা এই উৎসব উদযাপন করতে কার্পণ্য করেছেন এবং তারা এটি উপলব্ধি করতে পারেন নি; (এ জাতীয় কথা কখনো বলা যাবে না, কারণ) তারা কতই না উত্তম ব্যক্তি এবং সম্মানিত অনুসারী। হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু আনহু— “যে সব ইবাদত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীরা করেন নি সেগুলো তোমরা করো না; কেননা পূর্ববর্তীরা পরবর্তীদের জন্য বলার কোনো কিছু বাদ দেন নি। আর আল্লাহকে ভয় কর হে পড়ুয়ারা! তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের পথই অনুসরণ কর।